বরিশালের পাইকারি বাজার আলু শূন্য

News News

Desk

প্রকাশিত: ১০:১৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩

রাহাত খান : বরিশালের পাইকারি বাজার আলু শূন্য। বরিশালের আড়তে প্রতিদিন ১ হাজার মন থেকে ১ হাজার ২শ মণ আলু বিক্রি হলেও আজ আড়তে সর্বসাকূল্যে ৬০ থেকে ৭০ মণ আলু বিক্রি হয়েছে। বিকেলের সব শেষ তথ্য অনুযায়ী বরিশালের আড়তে এখন ৬০ থেকে ৭০ বস্তা আলু অবশিষ্ট আছে।

আড়তগুলোতে পর্যাপ্ত আলু না থাকায় খুচরা দোকানিদের কাছেও আলু নেই। যেসব খুচরা দোকানে আগে আলু কেনা ছিলো তারাও আলু বিক্রি করেছে সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। আলুর বাজারে সংকটের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম।

আলুর বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়লে গত ১৪ সেপ্টেম্বর সরকার ভোক্তা পর্যায়ে মুন্সিগঞ্জের আলুর কেজি প্রতি সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা এবং রাজশাহীর আলু ৩৬ টাকা দর নির্ধারণ করে দেয়। সে হিসেবে মুন্সিগঞ্জে সর্বোচ্চ ২৫ এবং রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ২৮ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে পারবেন হিমাগার মালিকরা। কিন্তু সরকারের বেঁধে দেয়া দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না কোথাও।

বরিশালে এক সপ্তাহ আগেও পাইকারি পর্যায়ে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে মুন্সিগঞ্জ এবং রাজশাহীর আলু। যা খুচরা পর্যায়ে ৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সরকারি বেঁধে দেয়া দরের চেয়ে বেশী দামে আলু কেনা থাকায় বিপাকে পড়েন বরিশালের আড়তদারারা। তারা অনেকটা আড়ালে আবডালে কেনাদামের সঙ্গে কিছু লাভ রেখে আলু বিক্রি করে তাদের আড়ত খালি করেন।

গত বুধবার বরিশালের আড়তে মুন্সিগঞ্জের আলু সর্বোচ্চ ৩২.৫০ টাকা কেজি দরে এবং রাজশাহীর আলু বিক্রি হয়েছে ৩৬.৫০ টাকা কেজি দরে। বৃহস্পতিবার মুন্সিগঞ্জের আলু সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা কেজি দরে এবং রাজশাহীর আলু বিক্রি হয়েছে ৩৮ টাকা কেজি দরে। তারপরও আড়তে মিলছে না আলু।

নগরীর সাগরদী বাজারের পাইকরী দোকানি ইসলাম ট্রেডার্সের মো. সাদী বলেন, প্রতিদিন তার দোকান থেকে খুচরা পর্যায়ে দোকানে অন্তত ১শ বস্তা আলু বিক্রি হয়। গত দুই দিন ধরে আড়ত থেকে আলু কিনতে পারছেন না।

এ কারণে খুচরা দোকানিদের কাছেও আলু বিক্রি করতে পারছেন না। আড়ত আলু শূন্য হওয়ায় খুচরা দোকানগুলোতে ভোক্তা পর্যায়েও আলূ শূন্য হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা তার।

চৌমাথা বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, দুইদিন আগেও আড়তে কিছু আলু ছিলো। আজ গিয়ে আড়তগুলো আলু শূন্য দেখা গেছে। খুচরা দোকানিরা আলু পট্টি গিয়ে আলু না কিনে ফিরে গেছেন।

নগরীর আলু-পিয়াজ পট্টির মেসার্স পায়েল এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মো. মাসুদ জানান, সরকার যে দর নির্ধারণ করে দিয়েছে সেই দরে মুন্সিগঞ্জ এবং রাজশাহীর মোকামে থেকে আলু কেনা যাচ্ছে না। সব শেষ ৩ দিন আগে মোকাম থেকে আলু এসেছে। স্থানীয় আড়তে যে আলু ছিল সেগুলো গত ৩ দিন বিক্রি হয়েছে। এখন আড়তগুলো আলু শূন্য হয়ে পড়েছে।

আড়তগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় আড়তে মজুদ থাকা আলু বিক্রির পর রাজশাহী কিংবা মুন্সিগঞ্জের মোকাম থেকে সাহস (সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হবে বলে) করে আলু আনছেন না আড়তদাররা। সরকার আলুর দাম পুননির্ধারন না করে দিলে আলুর বাজারে সংকট দেখা দেবে এবং ভোক্তা পর্যায়েও আলু পাওয়া যাবে না বলে আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা আশংকা করেন।

আলুর বাজারে সংকটের বিষয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশে যে পরিমাণ চালুর চাহিদা তার চেয়ে বেশি আলুর মজুদ আছে। মোকামেও সরকারের নজরদারি আছে। সুতারং মোকাম থেকেও বেপারি কিংবা আড়তদারদের বেশি দামে আলু কেনার কথা নয়। দাম নিয়ে কোন সমস্যা হওয়ার কথ নয়। পাইকারি আলু সরবরাহে কোন কারসাঁজি করলে প্রশাসন খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।