বরিশালে ঈদ কেনাকাটায় জমে উঠেছে পোশাক বাজার

News News

Desk

প্রকাশিত: ৩:৩৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০২৫

মো মনিরুল ইসলাম মনির :- আসন্ন ঈদ উপলক্ষে জমে উঠতে শুরু করেছে বরিশালের পোশাক বাজার।

শিশু-কিশোর কিংবা যুবক-যুবতী সকলের লক্ষ এবার ঈদ কেনাকাটা।
নগরীর পোশাক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়ছে দোকান গুলোতে ।


ক্রেতাদের এমন ভিড়ে খুশি ব্যবসায়ীরা। তবে দাম কিছুটা বাড়তিতে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ক্রেতাদের একটি অংশ।

এবারের ঈদে বাজারে বেশি বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় অরগেনজা, মেঘা, চান্দ্রিয়া, জয়পুরী ও পাকিস্তানি সারারা গারারা।

এছাড়া, সাদা বাহার, আগানূর, চিকেনকারী, সুতির গর্জিয়েস, কাতান, বাড়িস, কারচুপি, বালাহার, মটকা ও কাশ্মীর কাতান থ্রি পিসের চাহিদা রয়েছে।

শাড়ির মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে, বি প্লাশ খাড্ডি বেনারসি, চেন্নাই সিল্ক, বুটিক, ক্রেসপি, মান্দানি ও জামদানি।

ছেলেদের পাঞ্জাবি, টুপি এবং প্যান্টও বিক্রি হচ্ছে সমহারে। এছাড়া, কসমেটিক্স পণ্যের চাহিদাও কম নয়।

এদিকে শিশু, তরুন- তরুনী কারো জন্যই হাজারের নীচে জুতা নেই ব্র্যান্ডের দোকানে।


তাই অখ্যাত জুতার বাজারে ঘুরছে বেশিরভাগ ক্রেতা। এখানেও দাম চাহিদা অনুযায়ী বেশি বলে অভিযোগ তাদের।

তারপরও ছোট শিশু কিংবা কিশোর ছেলেটির হাত ধরে এ দোকান ও দোকান ঘুরে পছন্দের জুতা কিনে নিচ্ছে বাবা-মা।

সরেজমিনে বরিশালের সদর রোড, হেমায়েতউদ্দিন সড়ক ও চকবাজার ঘুরে দেখা গেছে ঈদের নতুন নতুন আকর্ষণ সৃষ্টি করে ক্রেতাদের টানার চেষ্টা জুতা ও পোষাকের দোকানে।

চকবাজার সড়কের দুপাশে এ নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা দেখা গেছে। এখানে এপেক্সের ক্যাশব্যাক অফার ছাড়াও রয়েছে ডিসকাউন্ট।

বলা যায়, প্রতিবছরের মতো এবারও ১৫ রোজা পার হতে না হতেই ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে সদর রোড, হেমায়েতউদ্দিন সড়ক ও চকবাজার এলাকার মার্কেটগুলো।


এখানে ছোট দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে সবখানেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
তবে মার্কেটগুলোতে পুরুষদের তুলনায় নারীদের ভিড় বেশি। অপরদিকে বয়স্কদের চেয়ে তরুণ-তরুণীরা কেনাকাটায় বেশি ব্যস্ত।

শাড়ি, থ্রি-পিস, এ্যামিটিশনারী গহনাসহ অন্যান্য প্রসাধনী কিনতে যথেষ্ট ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

নগরীর চকবাজার, গীর্জা মহল্লা, ফজলুল হক এভিনিউ, কুয়েত প্লাজা, পোশাক আজাদীর্জা মহল্লা, মার্কেট, সিটি মার্কেট, ফাতেমা কমপ্লেক্সসহ ছোট বড় বিভিন্ন মায়োসিন দোকানে।

পাশাপাশি তৈরি পোশাকের দোকান, জুতা-স্যান্ডেলটির কসমেটিকসের দোকানগুলোতেও উপচে পড়ছে ক্রেতাদের এই ভিড়।

তরুণদের বেশিরভাগ অংশের ভিড় শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে।
আবার তরুণীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে ভারতীয় পোশাক জিসা, হিরকানি, চকোর, ফিয়োনা, পাকিস্তানি লোন, কটন, জর্জেট, গাউন ড্রেস, শেরওয়ানি কাট থ্রি পিস যা প্রকার ভেদে দেড় হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শাড়ির মধ্যে ক্রেতারা পছন্দ করছেন টিস্যু সিল্ক, এম ক্রাফট, টাঙ্গাইলের শাড়ি, মিরপুরের কাতান ও ঢাকাই জামদানি শাড়ি।

গতবারের তুলনায় এবার শাড়ির দাম বেড়েছে বলে জানান ক্রেতারা।

ঈদে কেনাকাটা করতে আসা লামিয়া আক্তার বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার বৈচিত্রময় ডিজাইনের পোশাক ও শাড়ির সমাহার ঘটেছে বটে, কিন্তু দাম অনেক বেশি হওয়ায় তা মধ্যবিত্ত পরিবারের নাগালের বাইরে।

এক ক্রেতা বলেন, গত বছর যে ধরণের পাঞ্জাবি ৮০০ টাকায় পাওয়া গেছে, তার দাম এবার নেওয়া হচ্ছে এক হাজার ২০০ টাকা।

ভালো মানের শাড়ি ৬ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা, লেহেঙ্গা ২ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার ২০০ টাকা, লাসা ১ হাজার ৫০০ থেকে ছয় হাজার টাকা,
পাঞ্জাবী ৮০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা, প্যান্ট ৬০০ থেকে তিন হাজার টাকা, ফতুয়া ৪৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের শার্ট ৮৫০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা,

 


জুতা এক হাজার ২০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা, বাচ্চাদের বিভিন্ন পোশাক ৪০০ টাকার থেকে ১২৫০ টাকা পর্যন্ত দরে পাওয়া যাচ্ছে।

পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে আসা পার্ভেস আহমেদ বলেন, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের দাম ততই বাড়িয়ে চলছে।

এতে করে বাজেট ঘাটতির সাথে সাথে বিপাকে পড়তে হচ্ছে অনেককে। মনে হয় সারা বছরের ব্যবসা ঈদ মৌসুমেই করে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

নগরীর মহাসিন মার্কেট ব্যবসায়ী রাকিব হাওলাদার জানান, ১২ রোজার পর থেকে দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে।

আমরা ঢাকা থেকে পণ্য কিনে আনি। যাতায়াত খরচ যুক্ত করে পণ্য বেচাকেনা করছি। সারাবছর এই ঈদ মৌসুমের অপেক্ষায় থাকি বলে জানান তিনি।

একই কথা বলেন, জুতা ব্যবসায়ী সাব্বির হাওলাদার বলেন, এ মাসের প্রথম থেকেই বেচাকেনা শুরু হয়েছে।গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম কিছুটা বেড়েছে।

তারপরও ক্রেতারা তাদের সাধ্যমত পছেন্দের জিনিস কিনছেন। সবমিলিয়ে বিক্রি ভালোই।

মূল্য বৃদ্ধির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বছর আগের তুলনায় অনেক বেশি দামে কেনা হয়েছে। তাছাড়া পরিবহন খরচও বেড়েছে।

সবমিলিয়ে দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।