ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে সোনালী আঁশ পাট

News News

Desk

প্রকাশিত: ১১:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২২

এইচ, এম ইমরান, বরিশাল : সোনালী আঁশের সোনার দেশ, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। পাট একটি অর্থকারী ফসল, দেশ বিদেশে পাটের অনেক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশে এক সময় পাট রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা হতো।

তবে বাংলাদেশ থেকে এখন আর আগের মতো পাট রপ্তানি হচ্ছে না, পাট চাষে আগ্ৰহ হারাচ্ছেন অনেক পাট চাষিরা। বাংলাদেশে তিন ধরনের পাট চাষ করা হয়। দেশী তোষা,ও মেসতা, দেশী পাটের আঁশ সাদা, তোষা পাটের আঁশ লালচে, এবং মেসতা পাটের আঁশ সোনালী।

বাংলাদেশের জলবায়ু ও মাটি পাট চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে ভালো পাট জন্মে যেমন কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, নওগাঁ, নাটোর এবং বরিশালে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, মিশর, আমেরিকা পাটের চাষ হয়।

বরিশালের সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের আইচা-০১ গ্ৰামের পাট চাষি রাহিমা বেগমের সাথে কথা বলে জানাযায়। ০৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ মন পাট হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের দাম ভালো, বর্তমানে প্রতি মন পাটের দাম ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে পাট চাষিরা।

বাংলাদেশের পাটকল গুলো প্রধানত নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, খুলনার দৌলতপুর। বর্তমানে অনেক পাটকল বন্ধ হওয়ার কারণে অনেক পাট শ্রমিকদের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে,এ কারণে অনেক পাট শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করতেছে। পাটের চাহিদা বা উৎপাদন কমে যাওয়ায়, প্লাষ্টিক বজ্য জাতীয় পলিথিনের চাহিদা বেড়ে চলছে।

পলিথিনের কারনে মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এবং পরিবেশ দূষণ হচ্ছে এতে মানুষের অনেক রোগ ব্যাধি বেড়ে চলছে, পাট থেকে ব্যাগ,রশি, সুতা, বস্তা, কাপড়, কার্পেট, ইত্যাদি তৈরি করা হয়। পাটকাঠি জ্বালানি হিসেবে এবং কাগজ তৈরির কাজে ব্যাবহার করা হয়।

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ গত ২৩ আগষ্ট সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলায় চার দিনের সফরের অংশ হিসেবে অষ্টগ্ৰামে পেশাজীবী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুধী জনের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ অডিটোরিয়ামে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন,প্লাষ্টিক বজ্য ও পলিথিনের ব্যবহার যাতে হাওর এলাকায় পর্যটনের পরিবেশ নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

অথচ ২০০২ সালে সরকার ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের সংশোধনীয় আইনে নিষিদ্ধ করেছেন পলিথিন, এই আইনে আরো বলা হয়েছে পলিথিন উৎপাদন বিপণন ও বাজারজাত কারীদের ১০ বছরের কারাদণ্ড অথবা ১০ লক্ষ্য টাকা জরিমানার বিধান ও রয়েছে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে বিষাক্ত কেমিক্যালে তৈরি হচ্ছে পলিথিন। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে এবং জীববৈচিত্র্য কেও মারাত্মক হুমকির মুখে চলে যাচ্ছে। সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও প্রশাসনের চোখের সামনেই উৎপাদন ও বিক্রি হচ্ছে এই নিষিদ্ধ পলিথিন।

পরিবেশ বান্ধব পাটের ব্যাগ বাজারে না আশার কারণে ক্ষতিকর এই পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করা না গেলে মারাত্মক ভাবে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকার, বন্ধ হওয়া পাটকল গুলো পূনরায় চালু করে এবং বাংলাদেশ থেকে পলিথিন গুলো নির্মূল করে,পাট চাষিদের উৎসাহ দিলে, তাহলে পুনরায় আবার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও পরিবেশ দূষণ মুক্ত করা সম্ভব।