রাতের আঁধারে বিএডিসি’র ১০ টন আলু উধাও

News News

Desk

প্রকাশিত: ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২৩

শহিদুল ইসলাম সুজনঃ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বীজ-বিপণন) দপ্তরে চলছে ১০টন বীজ আলু নিয়ে নাটক। রাত যতো গভীর তখনই জেগে উঠে নয়ছয়ের মহা উৎসব। সরকারী নিয়মকে তোয়াক্কা না করে রাতের আঁধারে কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনে বীজ আলু চলে যায় নগরীর পোর্টরোডে আলু ব্যবসায়ীদের আড়ৎদে।

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের যুগান্তকারী নানান পদক্ষেপের মাধ্যমে যখন দেশে বিদেশে কৃষি বান্ধব সরকার হিসেবে সুখ্যাতি লাভ করছে ঠিক তখনই বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বরিশাল অফিসে চলছে অনিয়ম ও দুর্ণীতির মহোৎসব।অসাধু কর্মকর্তা ও ডিলারদের যৌথ দুর্ণীতির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বরিশাল অঞ্চলের কৃষকরা।

অভিযোগ রয়েছে কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের আশীর্বাদে লেবার সরদার মনিরকে মোটা অংকের মাসহারা দিয়ে ডিলারদের যোগসাজশে প্রতিদিন বীজ আলু বিক্রি হচ্ছে বাজারে। এমনই এক ঘটনার প্রমান মিলে সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে।
গত ২ডিসেম্বর নগরীর কেডিসি এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে সামনে সন্ধ্যা থেকে পোটরোডের ৪ব্যবসায়ী আলু নিতে যায় গিয়ে বসে থাকে। তখন স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তাদের জিজ্ঞেসা করলে তারা সরদার মনিরের কাছে ২২টণ আলুর মেমো আছে বলে জানান।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা সংবাদকর্মীদের খবর দিলে বিষয়টি অনুসন্ধানে করতে গিয়ে দেখা যায় ভিন্নরূপ।
রাত ১১টার সময় সরকারী অফিস থেকে কোন কাগজ পত্র ছাড়াই বীজ আলু নিতে আসে জননী ট্রের্ডাস ডিলারের পোর্টরোডের ৪ আলু ব্যবসায়ী।

পরবর্তীতে লেবার সরদার মনির ও উপ-সহকারী পরিচালক মামুনের উপস্থিততে ডিলারের কাগজ পত্র সংবাদকর্মীরা দেখতে চাইলে তারা কাগজ নিয়ে আসতেছি বলে পালিয়ে যায়। এর ২০মিনিট পরেই ওই ব্যবসায়ীরা লেবার সরদার মনিরকে ফোন দিয়ে বলেন,ভাই সাংবাদিকরা কি চলে গেছে? এখন কি আলু নিতে আসবো? তবে সরদার মনির বলেছে ২০টন,ডিলার ফরিদ বলছেন ২৪ টণ ও উপ-সহকারী পরিচালক বলছেন ২২টণ কারো কথার সাথে মিল না পেয়ে বুজতে আর বাকি রইলো না যে এখানে ১০টন আলু চোরাই ভাবে পাচার হচ্ছে।
পরর্বতীতে ট্রাকে উঠানো আলু আবার গাড়ি থেকে নামিয়ে গুদামে রেখে দেয় মনির। মনিরের এমন কর্মকান্ডে বির্তকে জড়িয়ে পড়েছেন ওই অফিসের সুনামধন্য কর্মকর্তারা।

এদিকে সংবাদকর্মীদের তোপের মুখে পড়ে মনির জানান, এটা এখন আর আলু হিসাবে নাই। এটা সরকার খাদ্য হিসাবে বাজারে বিক্রি করে দিছে। হাটখোলার ডিলার ফরিদ ভাই আলু কিনে সেই আলু বিক্রি করে দিয়েছে বাজারে। তবে ১০টন আলু কেন চোরাই ভাবে দেয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে উপ-সহকারী পরিচালকে মামুনের উপস্থিততে মনির বলেন, ভাই এর আগে ফরিদ ভাই বেশি দামে আলু কিনেছে।তখন তার অনেক ক্ষতি হয়েছে।
তাই মানবিক দৃষ্টিতে ১০টন আলু দিয়েছি। তবে এর জবাবে উপ-সহকারী পরিচালক বলেন, আমি কোন আলু ডিলার ফরিদ সাহেককে দেয় নি। তার কোন কাগজ আমার কাছে নাই এবিষয় স্যারেরা হয়তো ভালো বলতে পারবে। আর এই বীজ আলু খাদ্য হিসাবে বাজারে বিক্রি করতে সরকার ঘোষণা দিয়েছে।

তবে জননী ট্রের্ডাসের মালিক আলমগীর ফরিদ তিনি মুঠোফোনে সংবাদকর্মীদের বলেন, ভাই এতোরাতে আপনাদের কিছু বলতে পারবো না। আপনারা সকালে ফোন দিয়েন। আমি ২৪টণ আলুর আবেদন করেছি। আমি সকালে ১০টণ নিয়েছি। রাতে কতটন গেছে এর বেশি বলতে পারবো না। তবে ওই ১০টণের কোন রিসিভ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

তবে উপ-সহকারী পরিচালক মামুন ও লেবার মনিরের কথার সাথে ডিলারের কথার মিল না পাওয়ায় সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। যার পুরো ঘটনা সংবাদকর্মীদের কাছে ভিডিও রের্কড রয়েছে।

অপরদিকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ( বীজ-বিপপন) উপ-পরিচালক বলেন, আমাদের আলু গুদাম থেকে চুরি করে বাহিরে বিক্রি করার কোন সুযোগ নাই। তবে লেবার সরদার মনির যা বলেছে তার সত্য নয়। তিনি আমাদের অফিসের কোন স্টাফ না। আমরা তাকে লেবার হিসাবে রেখেছি।

এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বীজ ও বিপণন) যুগ্ন পরিচালক ড: মাহবুবুর রহমান বলেন, নিয়ম ছাড়া আমরা কোন বীজ ট্রাকে দেই নাই। মনির ও উপ-সহকারী পরিচালক মামুন যা আপনাদের বলেছে তা ভুল বলেছে। আর এটা কোন খাদ্য হিসাবে নেই,এটা এখনো বীজ আলু।
বীজ আলু ডিলার নিয়ে বাজারে বিক্রি করবে- কৃষকদের মাঝে বিতরণ করবে সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। তবে ট্রাকে উঠানো আলু আবার কেন সংবাদকর্মীদের দেখে নামানো হয়েছে? সেই প্রশ্নের জবাবে ও তিনিও ওই ১০টণ আলুর বিষয় স্পষ্ট কোন উওর দিতে পারে নি।

তবে লেবার সরদার মনির ও এক কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রতিদিন খুচরা বাজারে প্রায় ১শ থেকে ২কেজি আলু বিক্রি, ট্রাক থেকে মনিরের চাঁদাবাজি ও সরকারী বস্তা বাজারে বিক্রি, মনির নিজেকে ওই অফিসের স্টাফ হিসাবে দাবি করে সরকারের কোটি কোটি টাকার বীজ লোপাট করে নিজেই গড়েছে অটল সম্পত্তি সহ কর্মকর্তাদের আমলনামা নিয়ে আসছি আগামী পর্বে।