অনলাইন ডেস্ক : বরিশালে বন্ধুর হবু স্ত্রীকে ধর্ষণ এবং ভিডিও ধারণের অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (২৭ নভেম্বর) দিবাগত রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার তিন যুবক হলেন, বরিশাল নগরের রূপাতলী উকিল বাড়ি সড়কের জামিয়া কাসিমিয়া মাদরাসার শিক্ষক আবিদ হাসান ওরফে রাজু, বাবুগঞ্জ উপজেলার গাঙ্গুলি বাড়ি মোড় এলাকার বাইতুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম আবু সাইম হাওলাদার এবং সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ছাত্র হৃদয় ফকির।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার জাকির হোসেন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার তিন যুবক ভিন্ন ভিন্ন এলাকার বাসিন্দা হলেও তারা আগে একই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সেই সূত্রে পরিচয় এবং ঘটনার সময়ে তারা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করে একই বাসায় মিলিত হয়ে অপরাধ সংগঠিত করেছেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, বরিশাল বিমান বন্দর থানা এলাকার এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীর সঙ্গে একই এলাকার এক ছেলের প্রেমের সর্ম্পক ও পারিবারিকভাবে বিয়ের কথা ঠিক হয়। বিষয়টি ছেলেটির বন্ধু আবিদ হাসান, সাইম এবং হৃদয় ফকির জানতেন।

২০ আগস্ট রাতে হৃদয় ফকির ওই ছাত্রীকে মুঠোফোনে ফোন করে জানায়, তার হবু বরের সঙ্গে অন্য মেয়ের সম্পর্ক আছে। বিষয়টি প্রথমে বিশ্বাস করেনি ওই ছাত্রী। পরে অপর দুই বন্ধু একই কথা জানালে সে বিশ্বাস করে।

এরপর, হৃদয় ফকির ওই ছাত্রীকে জানায় ২৭ আগস্ট বরিশাল নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শের-ই-বাংলা সড়েকর ডা. হামিদ লেনের বাসায় তার হবু বর অন্য মেয়ে নিয়ে যাবেন।

হাতেনাতে ধরার জন্য তাকে ওই বাসায় যাওয়ার জন্য বলে। কথামতো ওই ছাত্রী ২৭ আগস্ট সকালে সেখানে গেলে হৃদয় ফকির, আবিদ হাসান, সাইম তাকে আটকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

ধর্ষণের পর ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় হৃদয় ও অপর দুই সহেযাগী।

এতে বাধ্য হয়ে কোথাও চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরে যায় ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী। পরবর্তীতে ভিডিওর কথা বলে ওই ছাত্রীকে আরও পাঁচ দফা ধর্ষণ করেন অভিযুক্তরা।

তারপর, ভিডিও প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করেন তারা। কিন্তু মেয়েটি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে একপর্যায়ে অভিযুক্তরা ওই ভিডিও হবু বরের বাবাকে দেখান। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হলে হবু স্বামীর সহায়তায় রবিবার থানায় অভিযোগ দেয় ওই ছাত্রী।

বরিশাল বিমান বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর মামলা অভিযোগটি রাতেই মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সূত্র : দেশ রূপান্তর