বরিশালে ঈদকে সামনে রেখে কামারপল্লিতে বেড়েছে ব্যস্ততা, তবে বাড়েনি আশানুরূপ বিক্রি

News News

Desk

প্রকাশিত: ৬:৪৩ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৪

মো: সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় : দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ-উল-আজহা। আর মাত্র কয়েকদিন পরই কোরবানির ঈদ। ঈদ-উল আজহাকে কেন্দ্র করে পশু কোরবানির সরঞ্জাম প্রস্তুত করতে কামারশালায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মকাররা। তবে ঈদ ঘনিয়ে এলেও আশানুরূপ বিক্রি বাড়েনি ঈদ উপলক্ষে তৈরি করা নতুন সরঞ্জামাদির।

বুধবার (১২ জুন) সরেজমিনে বরিশাল কামারপট্টি ঘুরে দেখা যায়, কামারশালার সামনে সাজিয়ে রাখা হয়েছে কোরবানি ঈদের অন্যতম অনুষঙ্গ ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটিসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি।

কামারশালার ভিতরে পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। হাতুড়ি পিটিয়ে কর্মকারেরা তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। নতুন তৈরির সঙ্গে পুরনো দা-বটি, ছুরি ও চাপাতিত সান দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

কর্মকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর কোরবানি ঈদের ১৫ থেকে ২০ দিন আগে থেকেই বেচাকেনা শুরু হলেও এবার ঈদের এক সপ্তাহ আগেও আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না। এছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে লোহা এবং কয়লার দাম তাই আগের তুলনায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা বিক্রি কম নতুন সরঞ্জামের।

এবছর প্রতি পিস বড় ছুরি এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার ২০০ টাকা দরে, মাঝারি সাইজের ছুরি ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দরে এবং ছোট ছুরি ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বড় সাইজের চাপাতি ওজন ভেদে ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সুমোন নামে এক কর্মকার চন্দ্রদ্বীপ প্রতিবেদককে বলেন, গত বছর কয়লার বস্তা ছিল এক হাজার ৬০০ টাকা, এবার তা কিনতে হচ্ছে দুই হাজার ২০০ টাকায়।

এছাড়া গত বছর যেই লোহার কেজি ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এবার সেটার দাম হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। এ কারণে এবার সব কিছু তৈরি করতে খরচ একটু বেশি পড়তেছে। তাই বিক্রি কমেছে নতুন সরঞ্জামের। অনেকেই পুরোনো ছুরি, চাপাতি ধার করিয়ে নিচ্ছেন।

সাইদুল ইসলাম নামে আরেক কর্মকার বলেন, উৎপাদন খরচ যেভাবে বেড়েছে সেই তুলনায় দাম বাড়েনি। কোরবানির ঈদের অল্প কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখনো পুরোদমে নতুন ছুরি, চাপাতি বিক্রি শুরু হয়নি। আশা করছি শেষ কয়েকদিন বেচাকেনা বাড়বে।

বরিশালে প্রায় শতাধিক পরিবার এই কামার পেশার সঙ্গে জড়িত। দিন দিন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে হুহু করে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া বাব-দাদার পুরোনো এই পেশা টিকিয়ে রাখাই দুস্কর হয়ে উঠেছে অনেকের পক্ষে। ঈদের দুই তিন দিন আগে বেচাকেনা বাড়বে বেলা আশা করছেন এ পেশার সঙ্গে জড়িতরা।