রানী এলিজাবেথের মুত্যুতে যুক্তরাজ্যে ১০ দিনের শোক ঘোষণা

News News

Desk

প্রকাশিত: ৯:৫৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজত্ব করা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে ১০ দিনের শোক ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, নিরবতা পালনসহ রয়েছে নানা আনুষ্ঠানিকতা। উইন্ডসর ক্যাসেলের সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে শেষ বিদায় জানানোর পর রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে সমাধিস্ত করা হবে।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তার মরদেহ দেখতে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হবে, তার জন্য পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যানজট তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে। আর সেই কারণেই পুরো বিষয়টিকে কীভাবে সামলানো হবে তার আগাম পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বার্কিংহাম প্যালেস থেকে রানির মৃত্যু সংবাদ জানানোর পর থেকেই সেখানে জড়ো হচ্ছেন নানা শেণি পেশার মানুষ। তারা ফুল হাতে অপেক্ষা করছেন রানিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। অনেকেই প্যালেসের গেটে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

প্রথমদিনে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে ট্রেনার বেল, সেন্ট পলস ক্যাথেড্রালের রাষ্ট্রীয় ঘণ্টা এক ঘণ্টা ধরে বাজবে। এছাড়া এলিজাবেথের জীবনের প্রতিটি বছরের জন্য প্রতি ১০ সেকেন্ড পরপর স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ ক্যাসেল এবং লন্ডনের হাইড পার্কে বন্দুকের স্যালুট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

দ্বিতীয় দিনে রানীর মরদেহ স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবার্গে তার সরকারি বাসভবন হলিরুডে স্থানান্তর করা হবে। এর মধ্যেই সিংহাসনে নতুন রাজার শপথের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রিভি কাউন্সিলর, লর্ডস, মেয়র, কমনওয়েলথভুক্ত দেশের হাইকমিশনাররা। নতুন রাজা চার্লস দেশটির পার্লামেন্ট ও চার্চের প্রতি অনুগত থাকার শপথ নেবেন।

মৃত্যুর তৃতীয় দিন এডিনবার্গের সেন্ট গাইলস ক্যাথেড্রালে রাজপরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে একটি অেনুষ্ঠান হবে। পরদিন রয়্যাল মাইল বরাবর হলিরুড থেকে সেন্ট জাইলস ক্যাথেড্রাল পর্যন্ত রাজপরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে একটি আনুষ্ঠানিক শোকযাত্রা হবে। সেই অনুষ্ঠানের পরে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সেন্ট জাইলস ক্যাথেড্রাল উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। আর রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা জানানো হবে লন্ডনে।

পঞ্চম দিন সন্ধ্যার পর রানির কফিন এডিনবার্গ ওয়েভারলি স্টেশনে স্থানান্তর করা হবে। সেখান থেকে রাতেই রাজকীয় ট্রেনে পরের দিন সকালে লন্ডনের সেন্ট প্যানক্রাস স্টেশনে পৌঁছানোর কথা।

পরদিন লন্ডনে আনুষ্ঠানিকতার কয়েক ঘণ্টা আগে কফিনটি বাকিংহাম প্যালেসে পৌঁছাবে। এরপর কফিন বাকিংহাম প্যালেস থেকে ওয়েস্টমিনস্টার হলে নেওয়া হবে। সেখানে পাঁচ দিন রাখা হবে।

রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধার সময় সাধারণ জনগণও রানিকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পাবেন। কফিনটি ওয়েস্টমিনস্টার হলের মাঝখানে একটি সুসজ্জিত শবমঞ্চে রাখা হবে। এটি দৈনিক ২৩ ঘণ্টা জনসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

সপ্তম দিনেও রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অব্যাহত থাকবে। ওই দিন বিশ্ব নেতারা ওয়েস্টমিনস্টার হলে রানীকে শ্রদ্ধা জানাবেন। এদিকে, নতুন রাজা বাকিংহাম প্যালেসে রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবেন।

অষ্টম দিন রাজা তৃতীয় চার্লস কার্ডিফের লাল্যান্ডফ ক্যাথেড্রালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওয়েলসে যাবেন। এরপর ওয়েলস পার্লামেন্ট যাবেন এবং সদস্যদের সমবেদনা গ্রহণ করবেন। এর মধ্যেই কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা লন্ডনে আসতে শুরু করবেন।

নবম দিনে রাজা চার্লস বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা গভর্নর জেনারেল ও ফার্স্ট মিনিস্টারদের অভ্যর্থনা জানাবেন।

ভিআইপি বিদেশি অতিথিরা রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধানুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। পরদিন রাষ্ট্রীয় শবযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। উইন্ডসর ক্যাসেলের সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে শেষ বিদায় জানানোর পর রাজকীয় ভল্টে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে সমাধিস্থ করা হবে।

ব্রিটেনের রানির মৃত্যুর পর তার শেষকৃত্য কীভাবে হবে তা যে বহুদিন আগেই ঠিক করে রেখেছে রাজ পরিবার। বহুদিন ধরেই এই নিয়ে চর্চা রয়েছে।

সূত্র : দেশ রূপান্তর