বরিশাল ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জয়নালের অপকর্মে অতিষ্ঠ বঙ্গবন্ধু উদ্যানের হতদরিদ্র দোকানীরা

News News

Desk

প্রকাশিত: ১০:২১ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের এক অসহায় নারীর চায়ের দোকান জোর করে দখল করে চিহ্নিত এক মাদক ব্যবসায়ীকে পাইয়ে দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

শুধু তাই নয় নির্বাচিত হওয়ার পর বিভিন্ন পরিমাণে টাকার বিনিময়ে বঙ্গবন্ধু উদ্যান পার্শ্ববর্তী জেলা প্রশাসনের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ টি দোকান ঘর স্থাপনের অভিযোগ এসেছে কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে।

জয়নাল আবেদীনের ভাই, ছেলে, ভাইয়ের ছেলেসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ জানিয়েছে ভুক্তভোগী চায়ের দোকানির মেয়ে খাদিজা। কাউন্সিলর জয়নালের কাছ থেকে দোকান রক্ষা করতে ১০ নং ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী তানিয়া আক্তার কে লিখিতভাবে দোকানটি ভাড়া দিয়েও ভয় ভীতির মধ্যে দিন যাপন করছে তারা ।

কেডিসি এলাকার চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা লাবনীকে চায়ের দোকানটি পাইয়ে দেয়ার জন্য প্রতিদিনই নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলেও জানায় অভিযোগকারী । কাউন্সিলর জয়নালের ভাই নুরুজ্জামান, ভাইয়ের ছেলে রাজু এবং ছেলে আশরাফুল লাবনীর সাথে একত্রিত হয়ে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশে মাদক বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সেই সক্ষতার খাতিলেই পূর্বেও লাবনীকে একটি দোকান বসিয়ে দিয়েছে তারা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ সকল অভিযোগ বিস্তারিতভাবে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরে ভুক্তভোগী চা দোকানির মেয়ে খাদিজার পক্ষে ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী তানিয়া আক্তার। তানিয়া আক্তার বলেন, ১০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে জয়নাল আবেদীন সহ তার পরিবারের সদস্যরা।

পুরো ওয়ার্ড জুড়ে মাদক বিক্রয়, চাঁদাবাজি, অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনা সহ সব ধরনের অপকর্ম করে আসছে তারা। বঙ্গবন্ধু উদ্যানে পার্শ্ববর্তী জেলা প্রশাসনের জায়গায় ওয়ার্ড এর বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে টং দোকান স্থাপন শুরু করে তারা। পূর্বেই অনেক দোকান থাকায় সেই দোকানগুলোকে পাশে সরিয়ে স্থান তৈরি করে নতুন দোকান বসানো শুরু করে।

দোকান বসানোর জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩০ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছে প্রতি দোকান ধরে। এরপর আর স্থান না থাকায় তারা পূর্বে যারা দোকান দিয়েছে তাদের দোকানগুলো জোর করে দখল করা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু উদ্যানের আশপাশে এখন এমন কোন স্থান নেই যেখানে তারা টাকা নিয়ে দোকানে স্থাপন করেনি।

সড়কের পাশে স্থান না থাকায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানের মাঠের মধ্যে পর্যন্ত দোকানে স্থাপন করেছে তারা । সর্বশেষ কেডিসি এলাকা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী লাবনীর হয়ে অসহায় এক নারীর চায়ের দোকান দখলের চেষ্টা চালায়। এ বিষয়ে বারবার ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল জয়নাল আবেদীনের দ্বারস্থ হয়েও কোন লাভ হয়নি জানায় তানিয়া আক্তার। তাদের কথা না মানায় যেকোনো সময় বড় ধরনের হামলা শিকার হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে অভিযোগকারীরা।

১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীনের ভাই, ছেলে ও ভাইয়ের ছেলে কেডিসি ও বঙ্গবন্ধু উদ্যান এলাকায় মাদক বিক্রেতাদের মদদদার হিসেবে কাজ করে বলে জানায় অভিযোগকারীরা। তাদের উপদ্রবে উদ্যানে আশা দর্শনার্থীরা নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে । কাউন্সিলর জয়নালের ছেলে আশরাফুলের দ্বারা উদ্যানে আসা এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে কিছুদিন পূর্বে। প্রতিদিনই এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা।

কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে জয়নাল আবেদিন নিজেকে কখনো সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে কখনো আবার বাস মালিক সমিতির সভাপতি অসীম দেওয়ানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে জাহির করে এ সকল অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানায় অভিযোগকারী তানিয়া আক্তার। এক কথায় তাদের উপদ্রবে এখন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ১০ নং ওয়ার্ডের সাধারণ বাসিন্দারা।

তাদের হাত থেকে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আশেপাশে দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা হতদরিদ্রদের রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এই নারী নেত্রী। এমন অভিযোগগুলোর বিষয়ে সততা স্বীকার করেছে উদ্যানের পার্শ্ববর্তী একাধিক দোকানদার।তবে মারধর ও হামলা শিকার হওয়ার ভয়ে অনেকেই সরাসরি মুখ খুলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীনের সাথে আলাপের জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।