গাধা জল ঘোলা করে খায় : তথ্যমন্ত্রী

News News

Desk

প্রকাশিত: ৮:৩২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : বর্তমান সরকারের অধিনে নির্বাচনে না যাওয়া নিয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গাধা জল ঘোলা করে খায়। ২০১৮ সালেও গাধা জল ঘোলা করে খেয়েছিল, নির্বাচনের বহু আগে থেকে সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বলে এসেছিলো বিএনপি। পরে গাধা জল ঘোলা করে খেয়েছে, নির্বাচনে গেছে।

তিনি বলেন, ‘এবারও উনারা বলছেন নির্বাচনে যাবেন না। কিন্তু বিএনপির অনেক নেতাকে আমি জানি, চিনি, শুনি। মির্জা ফখরুল সাহেব যাই বলুন, বিএনপি নেতারা নির্বাচনে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে বসে আছেন।

রবিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আসন্ন বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭ উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সাথে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন ও যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ উল হক এ সময় বক্তব্য দেন।

এ দিন সকালে জাতীয় জাদুঘরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ শীর্ষক প্রদর্শনীর কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটু আগে সেই প্রোগ্রাম থেকে এসছি, যেখানে বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের শিকার, নিহতদের পরিবার এবং আহতদের আর্তনাদ পুরো মিলনায়তনকে কাঁদিয়েছে।

বিদেশি কূটনীতিকরা সেখানে ছিলেন, তারা কেঁদেছেন, আমি নিজে কাঁদতে বাধ্য হয়েছি। সাংবাদিকরা কেঁদেছেন, প্রধানমন্ত্রী সেখানে তারও চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।’

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক বক্তা তার বক্তৃতায় বলেছেন- আমরা যেন আমাদের জীবদ্দশায় আমার স্বামী বা আমার সন্তান বা আমার পিতা হত্যার বিচার দেখে যেতে পারি। ১৯৭৭ সালে বিনা বিচারে নিহতের সন্তানরা বলেছেন- আমার বাবার কবর কোথায় আমি জানি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা দাবি করেছেন, তারা যেন তাদের বাবার কবর কোথায় সেটি জানতে পারে এবং এই হত্যাকাণ্ডের যাতে বিচার হয়।

মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান হাজার সেনাসদস্যকে বিনা বিচারে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল, জামায়াতকে সাথে নিয়ে যারা অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য করেছিল- বিএনপি সেই দল। যারা মাঠে গিয়ে বোমা নিক্ষেপ করেছে শুধু তারা নয়, এগুলোর পেছনে অর্থায়ন আছে, হুকুমদাতা আছে, বিএনপির হুকুমদাতা আর অর্থদাতার বিচারের আওতায় আনতে হবে। এটি সময়ের দাবি এখন এবং যাদের আর্তনাদ শুনেছি তাদের দাবি।

যুদ্ধটা বন্ধ করুন, পৃথিবীকে রক্ষা করুন : কপ-২৭-এ বাংলাদেশের আহ্বান
এর আগে কপ-২৭ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে যোগদানের জন্য ঢাকা ত্যাগের পূর্বে পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার একটি দেশ। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই।

আমাদের দেশে আজ থেকে ১২-১৩ বছর আগে জনপ্রতি প্রতিবছর গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ ছিলো ০.২ টন। সেটা একটু বেড়ে এখন ০.৬ টন। আর অন্যদিকে উন্নত দেশগুলোতে জনপ্রতি প্রতিবছর গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ ইউরোপে ১০ টনের বেশি, আমেরিকায় ১৫ টন বা আরো বেশি। এবং দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এখন এই মাত্রা ৪-৫ টনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই তুলনায় আমাদের ক্ষতিকর ভূমিকা নেই, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব আমাদের ওপর অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি পড়ছে।

আক্ষেপ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পুরো পৃথিবী জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, পৃথিবীর মানুষ, পৃথিবীর রাজনৈতিক নেতৃত্ব পৃথিবীকে রক্ষা করার পরিবর্তে এখন কে ন্যাটোতে যোগ দেবে কে দেবে না সেটি নিয়েই ব্যস্ত।

আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যস্ত, একে অপরকে ধ্বংস করতে ব্যস্ত, একে অপরের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ব্যস্ত। পুরো মানবজাতি যে, একটি মহাদুর্যোগের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে এবং সেই প্রেক্ষিতে পুরো মানবজাতির অস্তিত্বই যে হুমকির মুখে পড়ছে, সেটি নিয়ে মাথাব্যথা খুব কম।

ড. হাছান জানান, জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে এবারের মূল বক্তব্য থাকবে যে, ‘দয়া করে যুদ্ধটা বন্ধ করুন, একে অপরকে ধ্বংস করার পরিবর্তে সবাই মিলে পৃথিবীটাকে রক্ষা করুন। দ্বিতীয়ত, আমরা যারা জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার, আমাদেরকে যেহেতু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, প্রতিশ্রুত সাহায্য করতে হবে। আজকে থেকে শুরু হওয়া এবারের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে এই বক্তব্যগুলোই তুলে ধরবো।’

আমাদের সাংবাদিকরা এক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পরিবেশ সচেতনতাটা আমাদের দেশে অনেক দেশের তুলনায় ভালো। এটির পেছনে সাংবাদিকদের অবদান আছে। আমাদের ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরাম দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে কাজ করছে, তারা এ সম্মেলনে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন