যুক্তরাষ্ট্রে পানিতে ডুবে ২ প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু

News News

Desk

প্রকাশিত: ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : অবকাশ যাপনে গিয়ে লেকের পানিতে ডুবে প্রাণ হারালেন দুই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি। এ ঘটনায় আরেকজন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। তিনি পানিতে না ডুবলেও ঘটনার আকস্মিকতায় জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। নিউইয়র্ক আপস্টেটে বেথেল টাউনের হোয়াইট লেকে (সমুদ্র সংলগ্ন) স্থানীয় সময় গত ২৮ আগস্ট দুপুরে গোসল করার সময় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রস্থ কুমিল্লা জেলার বড়োরা উপজেলা এসোসিয়েশন’র উপদেষ্টা নিউইয়র্ক সিটির বেলরোজের বাসিন্দা রুহুল আমীনের (পেড্ডা গ্রাম অধিবাসী) জামাতা আফরিদ হায়দার (৩৪) ও ছোট ছেলে বাছির আমীন (১৮)। ঘটনাস্থল থেকে রুহুল আমিনের ছোট মেয়ে নাসরিন আমীনকে (২১) গুরুতর অবস্থায় নিকটস্থ গারনেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিউইয়র্ক সিটি থেকে ১২০ মাইল দূর সুলিভান কাউন্টি দমকল বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৩ ব্যক্তি ডুবে যাবার সংবাদ জানার পরই ডুবুরিরা উদ্ধার অভিযান চালায় এবং তিনজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়। চিকিৎসকরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েও আফরিদ এবং বাছিরকে বাঁচাতে পারেননি।

নাসরিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল বলে বড়োরা উপজেলা সমিতির সেক্রেটারি বদরুল হক আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান। তিনি উল্লেখ করেছেন, লেকের ধারে একটি বাসা ভাড়া করেন আফরিদ হায়দার। স্ত্রী নাঈমা, শ্যালিকা-শ্যালকসহ পরিবারের সকলকে নিয়ে ২৭ আগস্ট ঐ বাসায় উঠেন অবকাশ যাপনের অংশ হিসেবে।

পরদিন অর্থাৎ রোববার সকালে নাস্তা গ্রহণের পর তিনজন নামেন লেকে। দু’তিন ঘন্টা তারা লেকের পানিতে আনন্দ- উল্লাস করছিলেন। এমনি অবস্থায় বাছির আমিন গভীর পানিতে ডুবে গেলে এমন মর্মান্তিক পরিস্থিতির অবতারণা হয়।

পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে বদরুল আজাদ আরো জানান, গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর আফরিদ হায়দারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ নাঈমা পানিতে নামেননি বলে বেঁচে গেলেও ঘটনার আকস্মিকতায় জ্ঞান ফারিয়ে ফেলেছেন। তাকেও ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। আফরিদ ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির এস্টোরিয়ার বাসিন্দা আরজু হায়দার দম্পতির একমাত্র পুত্র সন্তান। তাকে হারিয়ে সকলেই গভীর শোকে কাতর পরিবারটি।

সমুদ্র সৈকতের সন্নিকটের এক বাসিন্দা বাছিরকে ডুবে যেতে দেখেন। তিনি টহল পুলিশকে জানান যে, তরুণটি পানিতে ডুবে গেলে একজন ঝাঁপ দেন তাকে উদ্ধারে। কিন্তু তিনিও ভাসতে পারেননি দেখে অপর তরুনী পানিতে ডুব দেন ওদেরকে উদ্ধারে। তিনিও ভাসছেন দেখেই পুলিশকে ফোন করা হয়। মিনিট খানেকের মধ্যেই দমকল বাহিনীর ডুবুরিরা আসেন হোয়াইট লেক এবং কোনিউগা লেক এলাকা থেকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ সময়ে লেকের উপরিভাগের পানি কিছুটা উষ্ণ থাকলেও গভীরে খুবই ঠাণ্ডা থাকে। আর এতটাই ঠাণ্ডা যে তার সংস্পর্শে গেলে বাঁচার উপায় থাকে না। ভয়ংকর এমন অবস্থার কথা নবাগতরা জানেন না বলেই এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পতিত হন। সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী নিহত ভগ্নিপতি ও শ্যালকের জানাজা স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টায় জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই দাফন করা হবে লং আইল্যান্ডে ওয়াশিংটন মেমরিয়্যাল মুসলিম গোরস্থানে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন