কমিটিতে আরও দুই দফা আসছে বড় রদবদল

News News

Desk

প্রকাশিত: ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ২০, ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি পুনর্গঠনের প্রথম ধাপে ব্যাপক রদবদলে দলের ভিতরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এতে সিনিয়রসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন। এটাকে মূল্যায়নের নামে অবমূল্যায়ন হিসেবেই দেখছেন তারা।

সামনে আরও দুই দফা বড় আকারের রদবদলের প্রক্রিয়া চলছে। আরও অনেক বড় বড় নেতার পদেও সহসাই পরিবর্তন হতে পারে। এতে কে কোথায় গিয়ে ছিটকে পড়েন তা কেউ বলতে পারছেন না। দলের হাইকমান্ড তারেক রহমান ছাড়া কেউই জানেন না, কী হচ্ছে বা অদূর ভবিষ্যতে কী হবে।

তবে এবারের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দলের ভিতরে ‘টপ টু বটম’ পরিবর্তনের একটা পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন তিনি। আর তিনিই হচ্ছেন সেটির একমাত্র রূপকার। সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, জোরেশোরেই এবার দল গোছানোর কাজ শুরু করেছে বিএনপি। দলকে শক্তিশালী করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছেন নীতিনির্ধারকরা। বিগত আন্দোলনের ব্যর্থতায় একের পর এক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হচ্ছে। আবার ধারাবাহিকভাবে পুনর্গঠনও করা হচ্ছে।

তারই অংশ হিসেবে গত শনিবার (১৫ জুন) কেন্দ্রীয় বিএনপিতে বৃহৎ রদবদল, আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক দুটি কমিটি পুনর্গঠন ও ছাত্রদলের কমিটির আকার বাড়ানো হয়েছে। বর্তমান অবস্থায় বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতেও একাধিক সদস্য যুক্ত হতে পারেন।

যেখানে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ও শামসুজ্জামান দুদুর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে মেজর (অব.) হাফিজকে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানও করা হতে পারে।

আবার সমমনা দল থেকেও দু-একজনকে স্থায়ী কমিটিতে আনা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের নাম আলোচনায় আছে। তিনি গত শনিবার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন।

সম্প্রতি ৩৯ জন নেতার মধ্যে পদোন্নতির নামে যাদের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা করা হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন প্রমোশনের নামে কার্যত তাদের ‘ওএসডি’ করা হয়েছে। বিশেষ করে দলের সাবেক যুগ্মমহাসচিব ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হারুন অর রশিদ, আসলাম চৌধুরীসহ কয়েকজনকে পদোন্নতির নামে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই এটা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বিএনপিতে উপদেষ্টা পদটি মূলত একটি ‘অর্নামেন্টাল পোস্ট।

পদটি ভাইস চেয়ারম্যানের পদের সমমর্যাদার হলেও উপদেষ্টা পদ কার্যত ক্ষমতাবিহীন। চার দিন ধরে ঘোষিত একাধিক কমিটি নিয়ে দলে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে। ভালো বা সিনিয়র পদ পেয়েছেন এমন নেতারা মনে করছেন, তারা আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ার যোগ্য ছিলেন।

আবার তালিকায় জুনিয়র বা বাদ পড়া নেতারা বলছেন তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তবে এমন পরিস্থিতির পরও আগামী কয়েক দিনে আরও কয়েকটি কমিটি পুনর্গঠনের ঘোষণা আসতে পারে। এসব বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এটা হঠাৎ কোনো ঘটনা নয়। দলের নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম। চলমান প্রক্রিয়া। ওই কমিটিগুলোর মেয়াদ আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই বাতিল করা হয়েছে। দলকে শক্তিশালী করতে এ ধরনের সাংগঠনিক কাজ অব্যাহত থাকবে।

বিএনপির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, দলকে আরও কার্যকর এবং গতিশীল করতে অবশ্যই দলে পুনর্গঠনের দরকার আছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিশ্চয়ই সেটা বুঝে কাজ করছেন। এর ইতিবাচক প্রভাব অচিরেই পড়বে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যুগ্ম মহাসচিব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলের যে কোনো সিদ্ধান্তই নীতিনির্ধারণী মহল নিতে পারেন। কিন্তু আমরা যারা (বিনা বেতনে) রাজনীতি করি- তারা সম্মানের জন্যই তা করি। আমাদের সম্মান না দিতে পারলেও অন্তত অসম্মান দেওয়ার অধিকার তো কারও নেই। কিন্তু দলে এখন সেটিই হচ্ছে।

এটা দুঃখজনক। সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে যুগ্ম মহাসচিব পদোন্নতি পাওয়া নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গঠন ও পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে সংগঠনকে সুসংহত করা, ঐক্যবদ্ধ করা, শক্তিশালী করাই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। দলের হাইকমান্ড সেটাই প্রত্যাশা করেন। সেই প্রত্যাশা অনুযায়ীই দল এ রদবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন