বরিশালে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে শ্রমিকের উপর হামলাকে কেন্দ্রকরে রণক্ষেত্র News News Desk প্রকাশিত: ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ, মে ৫, ২০২৪ চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : বরিশালে বাস টার্মিনালে বহিরাগতের হামলায় ২ বাস শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনায় দফায় দফায় বরিশালে বিক্ষোভ, ভাংচুর ও সড়ক অবরোধ করেছে বাস শ্রমিকরা। সড়ক অবরোধে বরিশালের দক্ষিন ও পূর্বাঞ্চলসহ বিভাগের অন্য ৫ জেলার সাথে যান চলাচলে বিঘ্নতার সৃষ্টি হয়। যদিও ঘন্টাখানিক পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে নথুল্লাবাদ এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও তা সন্ধ্যা সাতটা ত্রিশ মিনিটের দিকে পুনরায় তা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। তাতে ২০ জন আহত হয়েছে এমনকি মাহিদ্রা, বাস ভাংচুর করা হয়েছে। শনিবার (৪ মে) বেলা ১২ টার দিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শ্রমিকরা জানান, মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে বেলা ১২ টার দিকে একটি বাস যাত্রী নিয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা ত্যাগ করছিলো। ওই সময় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী একটি মোটরসাইকেলকে সাইড নেয়ার জন্য বাসের চালক হর্ণ বাজান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোটরসাইকেলে থাকা আরোহীরা বাসের চালককে মারধর করেন। আর তাকে বাঁচাতে অন্য একজন এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করা হয়। এসময় বাসের চালক শাকিল ও সৌরভকে মারধরের খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ শ্রমিকরা ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে। এসময় তারা বিক্ষোভ করে এবং হামলাকারীদের আটক করে মারধরের চেষ্টাও করেন অনেকে। শ্রমিকরা ক্ষুব্দ হয়ে একপর্যায়ে টার্মিনালের সামনের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে। আহতরা জানান- যে বহিরাগতরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েয়েছে, তারা বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নব নির্বাচিত সভাপতি কাজী কবিরের ঘনিষ্টজন। কবিরের লোকজন কিছুদিন ধরেই নথুল্লাবাদ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু তারা কেউ পরিবহন সেক্টরের সাথে জড়িত নন। পরবর্তীতে দীর্ঘ আলোচনা শেষে সমঝোতার আশ্বাসে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিত স্বাভাবিক হয় নথুল্লাবাদ এলাকার। কিন্তু তা সন্ধ্যা সাতটা ত্রিশ মিনিটের দিকে পুনরায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। তাতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ, লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। এসময় ২০ জন আহত হয় এবং অর্ধশত মাহিদ্রাসহ , চার-পাচঁটি বাস ভাংচুর করা হয়েছে। বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম ফকির বলেন, ঘটনার সময় তিনিসহ নেতাকর্মীরা টার্মিনালের ভেতরে অফিস কক্ষে ছিলেন। চালকের ওপর হামলার খবর শুনে তাৎক্ষনিক তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। পরে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান। তিনি আরো বলেন, কি ঘটনায় হামলা তা আমি জানি না, তবে বহিরাগতরা এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ টার্মিনালের ভেতরে বহিরাগতদের নিয়ে আসতে পারবে না এবং কোন প্রশ্রয়ও নিতে পারবে না। এদিকে শ্রমিকদের অভ্যন্তরীন ঘটনাকে উস্কানি দিয়ে তৃতীয় পক্ষ সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন জেলা বাস মালিক গ্রুপের নেতারা। আর পুরো ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ান। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ফারুক হোসেন জানান, নথুল্লাবাদে শ্রমিক ইউনিয়েনর দুপক্ষের মধ্যে অনেকদিন ধরে সমস্যা আছে। পাল্টাপাল্টি কমিটি থাকলেও বর্তমানে তেমন কোন কার্যক্রম নেই। এখানে শ্রমিক ইউনিয়েনর যে অফিস ছিলো সেটি মে দিবস উপলক্ষে একপক্ষ খুলে দেয়। এতে অন্য পক্ষের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে প্রথমে দুইপক্ষের মধ্যে মৃদু সংঘর্ষ হয়। পরে টার্মিনালের ভেতরেও দুপক্ষের মারামারি হয়। একপর্যায়ে তারা সড়কে এসে অবরোধ করে, গাড়ী ভাংচুরসহ পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করে তুলেছে দুইপক্ষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দুইপক্ষের নেতাদের সাথে কথা বলে পরিস্থিত শান্ত করা হয়, যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এসময় টিয়ারশেল নিক্ষেপ, লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করা হয় হামলাকারীদের। এসময় প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে এবং আটক করা হয়েছে ১ জন। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরণের বিষয় না ঘটে সে লক্ষে পরবর্তীতে আবারো শ্রমিক নেতাদের সাথে বসে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। SHARES প্রচ্ছদ বিষয়: