বিচারিক আদালতের রায় ও আদেশ পাওয়া যাবে অনলাইনে: প্রধান বিচারপতি

News News

Desk

প্রকাশিত: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : চলতি বছর অধস্তন আদালতের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণে কমিটি গঠনের পর বর্তমানে মামলা দায়েরের চেয়ে নিষ্পত্তির হার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

এ বছরের প্রথম তিন মাস যেখানে মামলা নিষ্পত্তির হার ছিল ৮৫ ভাগ, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৫ ভাগে। দিন দিন নিষ্পত্তির হার বাড়ছে বলে জানান বিচার বিভাগের প্রধান।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা ছয়টি কোর্ট প্রযুক্তির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এ তথ্য দেন।

প্রযুক্তি ছয়টি হচ্ছে-সুপ্রিম কোর্ট মোবাইল অ্যাপ, মনিটরিং কমিটির অনলাইন রিপোর্টিং টুলস, আপিল বিভাগের ডিজিটাল অনুলিপি শাখা, আপিল বিভাগে প্রবেশ পাশ, অনলাইনে অধস্তন আদালতের রায় ও আদেশ প্রকাশ এবং শিশু আদালতের রিপোর্ট এন্ট্রি প্লাটফর্ম।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রব্বানী। এতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, অ্যাটর্নি জেনারেল এম আমিন উদ্দিনসহ বিভিন্ন আইন কর্মকর্তা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সম্পাদক এবং সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিচার ব্যবস্থায় তথ্য প্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, আগামী দিনের বিচার ব্যবস্থায় তথ্য-প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্ট অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাবে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, সেটা হলো স্বল্প সময় ও খরচে বিচারপ্রার্থী জনগণের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা।

সে জন্য বিচার ব্যবস্থাকে একটি তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে আমাদের সবাইকে ভূমিকা পালন করতে হবে। একটি যুগপোযোগী ও গতিশীল বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আমাদের সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।

বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিভাগ ভিত্তিক মামলা নিষ্পত্তিতে সব থেকে এগিয়ে ঢাকা বিভাগ। এ বিভাগের অধস্তন আদালতের নিষ্পত্তির ১৩০ ভাগ। দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকরা ২০০০ সালের আগে দায়ের করা এক হাজার ৫৮১টি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন জানিয়ে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত মামলার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিভিন্ন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে।

প্রধান বিচারপতির দেওয়া পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অধস্তন আদালতে ২ লক্ষ ৬৮ হাজার ৯৩৫টি দেওয়ানি মামলা হলেও নতুন এবং পুরনো মামলা মিলিয়ে নিষ্পত্তি হয়েছে ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৪৯৯টি। নিষ্পত্তির হার ১০২ ভাগ।

তবে ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তির হার শতভাগের নিচে। এই সময়ে অধস্তন আদালতগুলোতে ফৌজদারী মামলা হয়েছে ৮ লক্ষ ৪০ হাজার ৬০৪টি, নিষ্পত্তি হয়েছে ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার ৭৪৯ টি। ফৌজদারী মামলার নিষ্পত্তির হার ৯৫ ভাগ।

অধস্তন আদালতের পরিসংখ্যান তুলে ধরার পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি উচ্চ আদালতের মামলা দায়ের ও নিষ্পত্তির পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উচ্চ আদালতে মামলা হয়েছে ৬৪ হাজার ৬৪১টি। নিষ্পত্তি হয়েছে ৫০ হাজার ৯১০টি। নিষ্পত্তির হার ৭৯ ভাগ।

প্রধান বিচারপতি বলেন, এবার সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ ভোগ না করে অনেক বিচারপতি বিচারিক কাজ করে গেছেন। অবকাশে হাই কোর্টের বিচারকরা ১৩৮টি ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) নিষ্পত্তি করেছেন।

মামলা দায়ের ও নিষ্পত্তির পরিসংখ্যানের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের বিচার বিভাগের নানা উদ্যোগ, বাস্তবায়ন ও পরিকল্পনাও তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন