অনলাইন ডেস্ক : কুমিল্লা নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চলতি বছরের সর্বশেষ ছয় মাসে ৫৫টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ২০২২ সালে একই সময়ে খুন হয়েছিলেন ৮৩ জন। নানা অপরাধে মামলা হয়েছে ২ হাজার ৯৬০টি। বেশিরভাগই হত্যা মামলা।

জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় খুনের সংখ্যা ৫৫টি। পারিবারিক কলহের জেরে খুন হয়েছে চারটি। জমি সংক্রান্ত বিরোধে খুন হয়েছে সাতটি। আধিপত্য সংক্রান্ত বিরোধের জেরে খুন হয়েছে তিনটি। এছাড়া, পূর্বশক্রতার জেরে ১১ জন খুন হন। না জানা কারণে ৪টি খুন হয়েছে। বাকি ২৬টি অন্যান্য কারণে।

কুমিল্লার কয়েকজন সমাজ বিশেষজ্ঞ বলেন, এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্যতম কারণ পরকীয়া, জমিসংক্রান্ত বিরোধ ও মাদকের অর্থ জোগাড়, ইন্টারনেটের অপব্যবহার, অসহিষ্ণুতা, অতিমাত্রার ক্ষোভ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়। মানুষের মধ্যে নিষ্ঠুরতা ছড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে তুচ্ছ ঘটনায় মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে হত্যা করছে।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন, কুমিল্লায় সর্বশেষ ছয় মাসে ৫৫টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অধিকাংশ মামলা তদন্তনাধীন রয়েছে। অন্য মামলাগুলোতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘খুনের মামলাগুলো সব সময়ই গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে চার্জশিট দেওয়া হয়। প্রতিটি মামলার বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি রয়েছে। অনেক মামলা এখনো বিচারাধীন। আমরা চেষ্টা করছি সব মামলা গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে তদন্ত করতে।’

কুমিল্লা নারী ও শিশু কোর্টের অ্যাডভোটেক ফাহমিদা জেবিন আহমেদ বলেন, অনেক সময় আদালতে সাক্ষীদের অনিয়মিত উপস্থিতির প্রবণতা থাকায় হত্যা মামলায় বিচারকার্যে ধীরগতি দেখা দেয়। এছাড়া, কিছু অসাধু তদন্ত কর্মকর্তার কারণে মামলাগুলোতে দীর্ঘ সময় লাগে। এতে অপরাধীরা পার পেয়ে যান। হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হলে অপরাধ অনেকটাই কমবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সভাপতি শাহ মোহাম্মাদ আলমগীর খান বলেন, পারিবারিক ও জমি সংক্রান্ত বিরোধ দিনদিন বাড়ছে। মানুষের ভোগবিলাস আর লোভের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে নেই। একটু সম্পত্তির লোভে কেউ কাউকে খুন করতেও দ্বিধা বোধ করেন না এখন।

সূত্র : রাইজিংবিডি.কম