২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট, সমাজ হবে স্মার্ট সোসাইটি : প্রধানমন্ত্রী News News Desk প্রকাশিত: ২:২৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০২২ অনলাইন ডেস্ক : ডিজিটাল বাংলাদেশ করা হয়েছে বলেই করোনাকালে কোনো কাজ থেমে থাকেনি বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন আমাদের টার্গেট ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট, সমাজ হবে স্মার্ট সোসাইটি। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি মৌলিক স্তম্ভ। এক, স্মার্ট সিটিজেন। প্রতিটি নাগরিক (সিটিজেন) প্রযুক্তি ব্যবহারে হবে দক্ষ এবং উপযোগী। দুই, স্মার্ট ইকোনমি। আমাদের অর্থনীতির সব লেনদেন ও ব্যবহার হবে প্রযুক্তি নির্ভর। তিন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট। সরকারি সব সুযোগ সুবিধা ও কর্মকাণ্ড হবে প্রযুক্তর নির্ভর, প্রযুক্তির ব্যবহার হবে সর্বত্র। এবং সবশেষ স্মার্ট সোসাইটি। আমাদের পুরো সমাজটাই হবে প্রযুক্তি বান্ধব। তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হবার পর কম্পোলসারি করে দিলাম প্রত্যেকটা ফাইল কম্পিউটারে লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে। কিন্তু তখন সেই শিক্ষাটাও ছিল না। কাজেই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা এবং যা কিছু তখন থেকেই শুরু করি। তবে এর পেছনে কারণ আছে, কম্পিউটার আমি শিখলাম কোথা থেকে আমার তো শেখার কথা না, নেহাত বাংলার ছাত্রী। কিন্তু সজীব ওয়াজেদ জয়, সে যখন নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে পড়তো তার কম্পিউটার সম্পর্কে জ্ঞান ছিল। তাই কম্পিউটার সম্পর্কে আমার যতটুকু জ্ঞান তা সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেই আমি পেয়েছি। এটাই হলো বাস্তবতা। তিনি আরও বলেন, ১৯৯২ সালে আমরা একটা সুযোগ পেয়েছিলাম। যে সাবমেরিন কেবল যখন আমাদের আশেপাশে দেশ ইন্ডিয়া, মিয়ানমার থেকে শুরু করে সমস্ত দেশগুলো সংযুক্ত হয় তখন একটা উদ্যোগ ছিল। তখন বাংলাদেশ একটা প্রস্তাব পেয়েছিল সাবমেরিন কেবল বিনা পয়সায় সংযুক্ত হবার। তখন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় সে বলেছিল না, সংযুক্ত হওয়া যাবে না। তাহলে নাকি বাংলাদেশের সব তথ্য বাইরে চলে যাবে। কাজেই এটা করা যাবে না। আমরা সেই সুযোগটা হারালাম। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমাদের উদ্যাগ ছিল নতুন করে সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া, সঙ্গে সঙ্গে কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাটাও আমরা শুরু করলাম। সেখানেও একটি দুঃখের কাহিনী আছে, না বললে আপনারা জানবেন না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি চেষ্টা করলাম কম্পিউটার সংগ্রহ করতে। তখন আমাদের রিজার্ভ মাত্র ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার বিএনপির সরকার রেখে গিয়েছিল। কাজেই এতো বেশি টাকা খরচ করাও সম্ভব ছিল না। তারপরও আমার উদ্যোগে নেদারল্যান্ডের সঙ্গে একটা চুক্তি হলো- ১০ হাজার কম্পিউটার তারা দেবে অর্ধেক দামে। অর্ধেক আমরা অনুদান হিসেবে পাবো। আর অর্ধেক দাম দিতে হবে। ১০ হাজার স্কুল নির্দিষ্ট করলাম, চুক্তি করলাম। সেই কম্পিউটার আসার কথা। ইতোমধ্যে আমাদের পাঁচ বছর নির্দিষ্ট সময় শান্তিপূর্ণভাবে ২০০১ ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি। বিএনপি ক্ষমতায় এলো। এসেই সেটা (কম্পিউটার চুক্তি) বন্ধ করে দিল। কেন? যে কোম্পানির কাছ থেকে আমরা কম্পিউটার কিনছিলাম, আপনারা জানেন নেদারল্যান্ডের জাতীয় ফুলের নাম টিউলিপ। ওই কোম্পানির নাম ছিল টিউলিপ। রেহানা আমার ছোট, তার মেয়ের নাম টিউলিপ, সে এখন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি। যেহেতু তার নামে নাম, খালেদা জিয়াকে কেউ বুঝালো, দেখেনে না টিউলিপ কোম্পানি, এটা রেহানার মেয়ের নামে শেখ রেহানার কোম্পানি। সেজন্যে সেটা বাতিল করল। তিনি বলেন, সেই কোম্পানি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা করলো। আর সেই মামলায় বাংলাদেশের জেতার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। ৬২ কোটি টাকা খরচ করতে হলো এবং আমাদের ডেমারেজ দিতে হলো। আমি যখন ক্ষমতা আসলাম তখনও চলছিল। অনেক দেন দরবার করে ৩২ কোটি টাকায় নামাতে পেরেছিলাম। ১০ হাজার কম্পিউটার গেল, সঙ্গে আমাদের সম্ভাবনা গেল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমার ৭৬ বছর বয়স। বেশিদিন তো আর (বাঁচবো না)… যে কোনোদিন অক্কা পেতে পারি, তাই না? যে কোনোদিন চলে যেতে পারি। তারওপর গুলি, বোমা, গ্রেনেড হামলা… তারেক জিয়া-খালেদা জিয়াতো আমাকে ছেড়ে দেয়নি। বারবার আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। কিন্তু আমি বেঁচে গেছি। হ্যাঁ, আমরা আইভি রহমানকে হারিয়েছি, বহু নেতাকর্মীকে হারিয়েছি। কিন্তু বার বারতো এ আঘাতগুলো এসেছে আমার ওপর, হয়তো সামনেও আসবে। আমি এগুলো পরোয়া করিনি, করবো না। আমি আমার পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান, সেটাও করে দিয়ে গেলাম। ২০২১ থেকে ২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দিয়ে গেলাম।… আর ২১০০ সালে এই বদ্বীপ, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যেন এই বদ্বীপে জলবায়ুর অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়। দেশ উন্নত হয় এবং উন্নত দেশে স্বাধীনভাবে সুন্দরভাবে স্মার্টলি যেন তারা বাঁচতে পারে। এখন সব নির্ভর করছে আমাদের ইয়াং জেনারেশনের উপর, যুব সমাজের উপর। সূথ্র : দেশ রূপান্তর SHARES জাতীয় বিষয়: