‘দুর্গতিনাশিনী’ ফিরলেন কৈলাসে

News News

Desk

প্রকাশিত: ৯:৩০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৫, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : ‘দুর্গতিনাশিনী’ দেবীকে সাড়ম্বরে বিদায় জানিয়েছে মর্ত্যের বাসিন্দারা। শনিবার (১ অক্টোবর) সকালে ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে যে উৎসবের শুরু হয়েছিল ‘আনন্দময়ীর’ বন্দনায় বুধবার (৫ অক্টোবর) দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে তার সমাপ্তি ঘটে।

বিকাল ৪টায় বুড়িগঙ্গার ওয়াইজঘাটের বীণাস্মৃতি স্নানঘাটে পুরান ঢাকার শঙ্খনিধি মন্দিরের প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে দেবীকে বিদায় জানানো শুরু হয়।

একে একে বিসর্জন দেওয়া হয় ধানমণ্ডি সর্বজনীন পূজা কমিটির প্রতিমা ও টিকিটুলীর ইয়াং স্টার পূজা কমিটির প্রতিমা। ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল বলেন, ‘বিভিন্ন ঘাটে রাজধানীর নানা মণ্ডপের প্রতিমা একে একে বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে দেড় শতাধিক প্রতিমা বীণাস্মৃতি স্নানঘাটে বিসর্জনের পরিকল্পনা আছে’।

প্রতিমা বিসর্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে পুলিশের পাশাপাশি নৌ-পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যদেরও তৎপর ভূমিকায় দেখা যায়। এছাড়া শোভাযাত্রা যেসব সড়ক ধরে যাবে সেসব সড়কে নেওয়া হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, নিরাপত্তা জোরদারে দেড় শতাধিক পুলিশ সদস্য কাজ করছে। এর আগে দুপুর থেকে শুরু হয় বিসর্জনের শোভাযাত্রা। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা এনে জড়ো করা হয় পলাশীর মোড় ও ঢাকেশ্বরী পূজা মণ্ডপ এলাকায়। পাশাপাশি অনেকে পায়ে হেঁটে শোভাযাত্রায় শামিল হন।

এবার ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে পলাশী-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে নবাবপুর রোড থেকে সদরঘাট হয়ে ওয়াইজঘাটে বুড়িগঙ্গা তীরে শোভাযাত্রা শেষ হবে বলে ডিএমপি জানিয়েছিল।

ঘাটে আসার পর ভক্তরা শেষবারের মত ধূপধুনো নিয়ে আরতি নাচেন। শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যে নৌকা থেকে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ‘মাতৃরূপী’ দেবীকে এক বছরের জন্য বিদায় জানান ভক্তরা।

সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ‘পিতৃগৃহ’ থেকে পুত্র-কন্যা নিয়ে দুর্গা ফিরে যাবেন কৈলাসে তার ‘স্বামীর’ ঘরে। এক বছর পর নতুন শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে। শাস্ত্র বলছে, মহাসপ্তমীর দিন রোববার হওয়ায় এবার দেবী দুর্গা এসেছেন হাতিতে। দশমীতে মা কৈলাশে ফিরছেন নৌকায় চেপে।

এর আগে বিদায়ের সকালে বুধবার (৫ অক্টোবর) সকালে দশমীর বিহিত পূজা এবং দর্পণ বিসর্জনে শেষ হয় দেবীর শাস্ত্রীয় বিসর্জন। পাশাপাশি দেবী প্রতিমার হাতে জরা, পান, শাপলা ডালা দিয়ে আরাধনা করা হয়। এরপর পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হয়।এছাড়া আরাধনা আর সধবা নারীর সিঁদুর খেলার আচারে মুখরিত থাকে প্রতিটি মণ্ডপ।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, ত্রেতাযুগে ভগবান রাম তার স্ত্রী সীতাকে উদ্ধার করতে দেবী দুর্গার অকালবোধন করেন। ব্রহ্মার নির্দেশ অনুযায়ী দুর্গার সাহায্যে রাবণ বধ করে সীতাকে উদ্ধার করেন তিনি। দেবীর সেই আগমণের সময়ই দুর্গোৎসব।

রাম শরৎকালে দেবীকে আহ্বান করেছিলেন বলে এ পূজা শারদীয় দুর্গাপূজা নামেও পরিচিত।

সূত্র : দেশ রূপান্তর