
অনলাইন ডেস্ক : মেঘনায় জেলেদের জালে আশানুরূপ ইলিশ ধরা না পড়ায় বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। ফলে দাম চড়া।
এ কারণে দেশের জাতীয় মাছটি সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ছোট আকারের জাটকা ইলিশও বিক্রি হচ্ছে অতিরিক্ত দামে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে লক্ষ্মীপুর শহরের মাছ বাজার, দক্ষিণ তেমুহনী, উত্তর তেমুহনী ও জকসিন বাজার ঘুরে চড়া দামে ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, একদিকে মাছের সরবরাহ কম, অন্যদিকে ঘাট থেকে তা বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।
জেলেরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে মাছ শিকারে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে তাদের।
আর ক্রেতারা বলছেন, ইলিশের দাম বাড়ারে কারণে জাটকার স্বাদও নিতে পারছেন না তারা।
লক্ষ্মীপুর শহরের দক্ষিণ তেমুহনীতে মাছ কিনতে আসা নুর হোসেন বলেন, ছোট আকারের জাটকা ইলিশের দাম হাঁকাচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি। আধা কেজি ওজনের প্রতিকেজি ইলিশের দাম চাচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা।
৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি হাজারের ওপরে। আর এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এতো উচ্চ দামে আমাদের পক্ষে ইলিশ কেনা কষ্টসাধ্য। তাই ৪০০ টাকা কেজি ধরে জাটকা ইলিশ কিনেছি। ভরপুর মৌসুমেও ইলিশ সাধারণের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
আবদুর রহমান নামে আরেক ক্রেতা বলেন, মাছের যে দাম, এতে আমাদের পক্ষে কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
বিক্রেতা ফরহাদ হোসেন বলেন, মাছ ঘাটে ইলিশের পরিমাণ কম। তাই দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এছাড়া দেশি মাছেরও উপস্থিতি কম। ফলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দামও একটু বেশি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ট্রলার মালিক দুলাল হোসেন বলেন, মেঘনা নদীতে মাছ কম। তাই গভীর নদী এবং সাগরে গিয়ে মাছ শিকার করতে হচ্ছে।
ভরা মৌসুম হলেও সেখানেও আশানুরূপ মাছ পড়ছে না জেলেদের জালে। একদিকে মাছ কম, অন্যদিকে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে মাছ শিকারে জেলেদের খরচ বেশি পড়ছে। এতে ঘাটে একটু বেশি দামে মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি জানান, নদীর চেয়ে সাগরে কিছু ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সাগরের ইলিশের চেয়ে নদীর ইলিশের স্বাদ বেশি হওয়ায় ক্রেতারা নদীর ইলিেই চান। তাই বাজারগুলোতে সাগরের ইলিশের চেয়ে নদীর ইলিশের দাম বেশি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. সারোয়ার জামান বলেন, গভীর নদীতে থাকা জেলেরা কিছু মাছ শিকার করতে পারলেও মেঘনা নদীর কমলনগর ও সদরের অংশে তেমন মাছ পড়ছে না।
এর কারণ- মেঘনা নদীর গভীরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ইলিশ গভীর পানির মাছ। তাই এরা নদীর এ অংশে আসতে পারছে না।
এছাড়া নদীর মুখে ‘টং জাল’ পেতে রাখে অসাধু মৎস্য শিকারিরা। এর কারণেও ইলিশ মেঘনায় ঢুকতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম