কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০

News News

Desk

প্রকাশিত: ১১:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নে শোক সভা চলাকালে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ১০ জন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রবিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে গোস্বামী দুর্গাপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক সভায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। পুলিশ ও তার সামনেই দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা হামলা ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

আগস্ট মাস উপলক্ষে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে পর্যায়ক্রমে শোক সভা চলে আসছে। রবিবার গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নে শোক সভার নির্ধারিত দিন ছিল।

জানা গেছে, আসরের নামাজের পর গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে শংকরদিয়া বাজারের ওপর শোক সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। তার সাথে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শোক সভা শুরু হওয়ার পর গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক লাল্টু রহমান তার অনুগত নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিলসহ আলোচনা সভায় আসেন।

পরে সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিনের লোকজনের সাথে তাদের ঝামেলা হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশের সামনেই দুপক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হন।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত আওয়ামী লীগ নেতারা বারবার থামানোর চেষ্টা করলেও নেতাকর্মীরা একে অন্যের ওপর হামলা করতে থাকে। ভাঙচুর করা হয় বসার চেয়ার। সংঘর্ষ চলাকালে শোক সভায় আসা লোকজন ভয়ে পালিয়ে যান। প্রায় ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে দুই পক্ষের কমপক্ষে ২০ জনের বেশি আহত হন।

আহতদের মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ঝেন্টুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এছাড়া আহতদের মধ্যে অন্তত ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন জানান, বিকেলে অতিথিরা আসার পর শোক সভা শুরু হয়। আমি দুই হাজার মানুষের জন্য খাবার রান্না করি। বর্তমান চেয়ারম্যান লাল্টু রহমান শতাধিক লোকজনসহ মিছিল নিয়ে আসেন।

তাদের অনেকের কাছে দেশীয় অস্ত্র ছিল। আমরা আগে থেকে বুঝতে পারিনি। তারা এসেই আমার সমর্থক ও সাধারণ নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে। কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। আমার কয়েকজন কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বর্তমান চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা লাল্টু রহমান দাবি করেন, তার লোকজনের ওপর দবিরের লোকজন হামলা চালিয়েছে। এতে ৫ থেকে ছয়জন আহত হয়েছেন। আমার তিন ভাইয়ের মাথা ফেটে গেছে। নেতাদের সামনেই হামলা করেছে। আমরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছি মাত্র।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন, সভা শুরু হওয়ার পর স্থানীয় দুটি পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। আমাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে সভা শেষ করা হয়। বিষয়টি আমাদের জন্য বিব্রতকর। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননুর যায়েদ বলেন, আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন