করোনার চেয়ে ইদানিং মানুষ ক্যান্সার-‌টি‌বি‌তে বেশি মারা যায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

News News

Desk

প্রকাশিত: ৯:১৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২২
সংগৃহীত ছবি

অনলাইন ডেস্ক : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনায় বর্তমানে গ‌ড়ে একজন মারা যায়। অথচ প্রতিদিন টিবি ক্যান্সার, টি‌বি বা সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানাবিধ কার‌ণে অনেক বেশি মানুষ মারা যা‌চ্ছে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘কমিউনিটি, রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার অ্যাকশন প্ল্যান ফর টিবি’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, করোনার বিষয়ে আমরা অনেক স‌চেতন এখন। নিয়মিত সাধারণ মানুষও খোঁজ রা‌খেন। কিন্তু তারা খোঁজ রাখে না, টিবিতে প্রতিদিন এক শ’র বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। অন্য রোগের ম‌ধ্যে ক্যান্সারে প্রতিদিন প্রায় দুই থে‌কে আড়াই শ’ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। হার্ট অ্যাটাকেও একই রকম মারা যা‌চ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিউবার কুলোসিস বা টিবি পৃথিবীতে মানুষের মৃত্যুর প্রধান ১৩তম কারণ। সংক্রামক ব্যাধির মধ্যে মানুষের মৃত্যুর এটি দ্বিতীয় প্রধান কারণ। পৃথিবীতে প্রায় এক কোটি লোক টিবিতে আক্রান্ত।

বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ লোক এই রোগে মারা যায়। বাংলাদেশেও ৪০ হাজার মানুষ বছরে এর কারণে মারা যায়, যা প্রতিদিনের হিসাবে প্রায় ১০০ জনেরও বেশি। এ ছাড়া নতুন করে বছরে আরও তিন লাখ লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়।

তবে এর মাঝে ভালো দিক হ‌চ্ছে, বর্তমানে আমরা জানি কত লোক এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফ‌লে আমরা আক্রান্তদের চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসতে পারছি। যার কার‌ণে ৯৫ থেকে ৯৭ শতাংশ লোক সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। ক্রমে টিবি রোগীর সংখ্যা কমে আসছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশেই প্রায় ৮৬ শতাংশ টিবি আক্রান্ত রোগী রয়েছে। আর বাংলাদেশ এদের মধ্যে ৭ নম্বরে। তাই আমরা নিয়‌মিত এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, এ নিয়ে শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে একা কাজ করছে তা নয়। এ ছাড়াও অনেক সংস্থা, গ্লোবাল ফার্মের অনুদানে এনজিও, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে এবং তারা বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ কর‌ছে।

ফ‌লে ১০ বছর আগে যা ছিল তার থেকে টিবি অর্ধেকে নেমে এসেছে। শনাক্তের হারও এখন বেড়েছে। যা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। তবুও প্রতিবছর তিন লাখ নতুন আক্রান্ত অনেক বড় একটি বিষয়।

মন্ত্রী ব‌লেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে আমাদের দেশে আক্রান্ত হয় তিন লাখ ৬০ হাজারের মতো মানুষ, কিন্তু শনাক্ত হয় তিন লাখ সাত হাজার কিংবা ১০ হাজার। এই যে শনাক্তের বাইরে যারা আছেন তারাও আক্রান্তের ১৫ শতাংশ।

এটিও একটি বড় বিষয়। কারণ তারা চিকিৎসা নিচ্ছে না বরং রোগী সৃষ্টি করছে। যারা চিকিৎসা নিচ্ছে না তাদের কারণেই এই রোগ আরও বেশি ছড়াচ্ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, এ বিষয়ে পরিবার ও মানুষের মাঝে সতর্কতা বাড়াতে হবে। যাতে টিবি হলেও তারা চিকিৎসার আওতায় আসেন। একসঙ্গে যেখানে অনেক মানুষ বাস করে যেমন বস্তি, পোশাকশ্রমিকরা এক জায়গায় গাদাগাদি করে থাকে।

এতে তাদের সবচেয়ে বেশি টিবি আক্রান্ত হয়। এক্ষেত্রে একজনের যদি টিবি হয় সবার মাঝেই ছড়িয়ে যায়। আমরা চাই দেশ থেকে পোলিও-টিটোনাসের মতো টিবিও নির্মূল হবে। ৪০ হাজার লোক বছরে মৃত্যুবরণ করা সহজ বিষয় না। আমরা চাই একজন লোকও যাতে না মারা যায়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ডা. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সনাল।

অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন স্টপ টিবি পার্টনারশিপের নির্বাহী পরিচালক লুসিকা ডিটিউ, দ্য গ্লোবাল ফান্ডের সিনিয়র ফান্ড পোর্টফলিও ম্যানেজার জিওনজিওভার জাকাব।

সূত্র : রাইজিংবিডি.কম