এখন আমাদের একটা মাত্র দাবি এই সরকার কবে যাবে: ফখরুল News News Desk প্রকাশিত: ৯:০৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২২ অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন আর কোন নির্বাচনের কথা নয়। এখন আর ঘুম পাড়ানির কোন কথা নয়। এখন একটা মাত্র দাবি এই সরকার কবে যাবে। তাই আমরা বলেছি সবার আগে গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানসহ ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের মধ্য দিয়ে একটি জনগণের প্রতিনিধিত্ব শীল একটি পার্লামেন্ট ও সরকার গঠন করতে হবে। শনিবার (২০ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব সব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই লুটেরা সরকারের এলিট শ্রেণি হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ, তাদের মন্ত্রী, এমপি, ওয়ার্ড পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। আমলা কিছু আছেন যারা প্রতিদিন দেখবেন প্রজেক্ট তৈরি করছে কিভাবে তাদের সম্পদ আরও বৃদ্ধি পাবে। কানাডার বেগম বাজারে তাদের আরো বাড়ি তৈরি হবে। আরো আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু উচ্ছিষ্ট ভোগী শিক্ষক, কিছু বুদ্ধিজীবী। তারা যখন টক শোতে কথা বলেন মনে হয় মোমেন সাহেব যখন বলেছেন বেহেস্তে আছি এটা কোন অমূলক কথা নয়। তারা প্রমাণ করতে চান আসলেই মানুষ বেহেস্তে আছে। তিনি বলেন, এক কথায় বলা যায় এই সরকার হচ্ছে একটা লুটেরা সরকার। এই সরকারের সঙ্গে মানুষের কোন সম্পর্ক নেই। এই সরকার এই রাষ্ট্রকে ইতিমধ্যে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র পরিণত করেছে। এই সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করে না। যার প্রমাণ তারা একে একে দিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে এবং নিজেদেরকে স্বাধীন হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে তখন আওয়ামী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন ভারত সরকারকে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য, অর্থ তারা এই কথা বলতে চান-ভারত সরকারের অনুকূলেই এই সরকার টিকে আছে। তিনি বলেন, আমি গতকালকেও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলাম কিন্তু ব্যাখ্যা তারা দেয়নি, অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার জায়গা থেকে সরে আসেনি। তিনি একটা বক্তব্য দিয়েছেন সেই বক্তব্যে তিনি আবার ওইটাই এন শিওর করেছেন। তাই আমাদেরকে বুঝে নিতে হবে পরিষ্কার ভাষায় যারা অন্যের অনুকূল্যে টিকে থাকে তাদেরকে এই দেশের সরকার পরিচালনা ও শাসন করবার কোন অধিকার নেই। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতা এসেছে ততবারই তারা বর্গীদের ভূমিকা পালন করেছে। তারা আমাদের সম্পর্কে লুট করে নিয়ে গেছে। আজকে এই সরকার আমাদের ন্যূনতম যে অধিকার সেগুলো কেড়ে নিয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, একটি গণমাধ্যমে পরিষ্কার করে উঠে এসেছে গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা পরিচালিত আয়নাঘর নামে একটি টর্চার সেল আছে, সেই ছেলে আমাদের নেতা কর্মী মানুষদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, টর্চার করা হয় দিনের পর দিন মাসের পর মাস কাউকে সেখানে মেরে ফেলা হয় আবার কাউকে কাউকে বছরের পর বছর সেখানে রেখে দেওয়া হয়। এবং যারা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন তারা ভাগ্য প্রবাসী স্টেটমেন্ট গুলো এখন দিচ্ছেন, কথা বলতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ এখন পুরোপুরিভাবে একটি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে’ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় অপরাধ হচ্ছে বাংলাদেশের আত্মাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের আত্মা ছিল একটি গণতান্ত্রিক আত্মা, আমাদের স্বপ্ন ছিল মুক্ত সমাজ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে স্থায়ীভাবে একটি অস্থিরিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। এটা আমার কথা নয় এটা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কথা যিনি গণতন্ত্রের জন্য আজও বন্দী হয়ে আছে। তিনি বলেছিলেন বাংলাদেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ব্যর্থ রাষ্ট্র করা হচ্ছে এখন তাই হচ্ছে। প্রত্যেকবার নির্বাচনের আগে জনগণকে ভোট দেওয়ার জন্য লড়াই করতে হবে সংগ্রাম করতে হবে। আর এটার জন্য তাই হচ্ছে ওই খায়রুল হক সাহেব। এটাই হচ্ছে আমাদের প্রধান সমস্যা যে বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে। মির্জা ফখরুল বলেন, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ও ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে আওয়ামীলীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততোবারই তারা আমাদের আত্মা স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে। এর জন্যই আওয়ামীলীগকে অবশ্যই ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে বাংলাদেশকে ধ্বংস এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার কারণ কি। মির্জা ফখরুল, দুঃখ হয় আমার একটা দলের সাধারণ সম্পাদক তিনি জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করেন। দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনাও বলে থাকেন জিয়াউর রহমান নাকি যুদ্ধ করেন নি। জিয়াউর রহমানের নাকি বাইরে মুক্তিযোদ্ধার পোশাক ছিল ভিতরে নাকি ছিল পাকিস্তান চর, ধিক্কার দেই আমি যারা জিয়াউর রহমানের ভূমিকা কে অস্বীকার করে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে। আওয়ামী লীগ আজকের বিভিন্নভাবে ডাইভার্ট করতে চায় দাবী করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের অপকর্ম দুর্নীতি থেকে মানুষের মনকে অন্য দিকে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে দেশের মূল সংকট একটা সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। আওয়ামী লীগ জোর করে বিনা বুথে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় যন্ত্র কে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। এই আওয়ামীলীগকে আমাদের পবিত্র দায়িত্ব আন্দোলন আন্দোলন আন্দোলন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনগণকে রাস্তায় নিয়ে এই ভয়াবহ প্রসিস্ট রাষ্ট্র ধ্বংসকারী সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন SHARES জাতীয় বিষয়: