সকালে ঘুম থেকে উঠলেই কোমর ব্যাথা, কারণ কী?

News News

Desk

প্রকাশিত: ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক : রাতে ভালো ঘুমের পরও সকালবেলা বিছানা থেকে উঠেই অনেকের কোমর ব্যথা শুরু হয়। এই সমস্যা যেন সারাদিনের কাজের আনন্দ ম্লান হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি খুব সাধারণ একটি সমস্যা কিন্তু এর পেছনে থাকতে পারে বেশ কয়েকটি কারণ।

স্বাস্থ্য বিষয়ক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকে যুক্তরাষ্ট্রের ডা. তারা–লিন হলিন্স জানিয়েছেন, ঘুমের ভঙ্গি, দীর্ঘ সময় নড়াচড়া না করা, অনুপযুক্ত গদি বা বালিশ, এমনকি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা সকালে কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে।

সকালের কোমর ব্যথার ৪টি সাধারণ কারণ

১. ভুল ঘুমের ভঙ্গি

দিনের এক–তৃতীয়াংশ সময় আমরা ঘুমিয়ে কাটাই। ঘুমের সময় মেরুদণ্ড সঠিকভাবে না থাকলে তা কোমরে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। সবচেয়ে ভালো ভঙ্গি হলো পাশ ফিরে হালকা বাঁকানো হাঁটুসহ ঘুমানো কিংবা যদি স্লিপ অ্যাপনিয়া না থাকে পিঠের ওপর শোয়াই ভালো। পেটের ওপর শুলে ঘাড় ও মেরুদণ্ডে মোচড় লাগে।

২. দীর্ঘ সময় শুয়ে থাকা

যেভাবে ডেস্কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকলে শরীর শক্ত হয়ে যায়, ঠিক তেমনি রাতভর এক ভঙ্গিতে শোয়ার ফলে পেশিতে শক্তভাব ও প্রদাহ তৈরি হয়। সকালে উঠেই নড়াচড়া করার সময় ব্যথা বাড়তে পারে।

৩. গদি বা বালিশের সাপোর্ট ঠিক না থাকা

অতিরিক্ত নরম বা ঢেবে যাওয়া গদি মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বাঁক নষ্ট করে কোমরে চাপ সৃষ্টি করে। গদি খুব শক্তও হওয়া উচিত নয়; মাঝারি শক্ত ও সাপোর্টিভ গদি সবচেয়ে ভালো।

৪. শারীরিক সমস্যা বা গর্ভাবস্থা

ডিজেনারেটিভ ডিস্ক ডিজিজ, ফাইব্রোমায়ালজিয়া, স্পাইনাল আর্থ্রাইটিস, সায়াটিকা বা হারনিয়েটেড ডিস্কের মতো সমস্যায় সকালবেলা কোমর ব্যথা বাড়তে পারে। গর্ভাবস্থাতেও বাড়তি ওজন ও শরীরের ভারসাম্য বদলের কারণে একই সমস্যা দেখা দেয়।

সমাধানের উপায়: চিকিৎসকরা কোমর ব্যথার সমাধানের জন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। এসব মানলে সকালে ব্যথা নিয়ে জাগতে হবে না। সমাধানে যা করবেন:

সাপোর্টিভ বালিশ ব্যবহার করুন: পাশ ফিরে শুলে হাঁটুর মাঝে ছোট বালিশ রাখুন; পিঠের ওপর শুলে হাঁটুর নিচে বালিশ দিন।
ঘুমের ভঙ্গি ঠিক করুন: পাশ ফিরে শোয়ার সময় হাঁটু বাঁকুন, পিঠের ওপর শোয়ার সময় দুই হাত একই অবস্থানে রাখুন।

গদি নিয়মিত বদলান: সাধারণত ৬–৮ বছর পর গদি বদলানো উচিত। গদি যদি ঢেবে যায় বা শোয়ার পর অস্বাভাবিক ব্যথা হয়, তাহলে আগে বদলান।

উঠার আগে ধীরে ধীরে নড়ুন: বিছানাতেই হালকা স্ট্রেচ করুন, এক পা বুকে টেনে ধরুন কয়েক সেকেন্ড, তারপর অন্য পা। প্রয়োজন হলে হিটিং প্যাড দিয়ে পেশি গরম করুন।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন: অনেক সময় কোমর ব্যথা করতেই পারে। যদি কোমর ব্যথা দুইতিন মাস ধরে প্রায় প্রতিদিন সকালেই হয় বা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, তাহলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

 

ডা. হলিন্স জানান, সমস্যা বাড়ার আগেই চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করুন। সঠিক ব্যায়াম ও যত্ন আপনার কোমরকে অনেকটা স্বস্তি দেবে। শারীরিক থেরাপি বা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা আপনার ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। বেশি দেরি করে চিকিৎসকের কাছে গেলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাই ব্যথা বুঝতে চেষ্টা করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সকালের কোমর ব্যথা অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি ঘুমের ভঙ্গি, অনুপযুক্ত গদি-বালিশ বা দীর্ঘ সময় একই ভঙ্গিতে শোয়ার মতো সহজ কারণে হয়ে থাকে।

 

সঠিক গদি ও বালিশ বেছে নেয়া, ঘুমের ভঙ্গি সামান্য বদলানো, ঘুম থেকে ওঠার পর কয়েক মিনিট স্ট্রেচিং করার মতো ছোট ছোট পরিবর্তনেই ব্যথা অনেকটাই কমানো সম্ভব।

 

তবে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত এমন ব্যথা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি। সময়মতো যত্ন নিলে শুধু ব্যথা নয়, ভবিষ্যতের বড় ধরনের জটিলতাও এড়ানো যায়।


প্রকাশক : শারমিন সুলতানা
সম্পাদক : মো:সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়
সহ সম্পাদক : মো:শুভ হাওলাদার।
প্রধান উপদেষ্টা : মো: মকবুল হোসেন
যুগ্ন উপদেষ্টা : ডা. রিয়াদুল ইসলাম খান

 

বরিশাল ঠিকানা::
বিবির পুকুর পাড়
হাবিব ভবন, ৫ম তলা

ঢাকা ঠিকানা::
উওরা ১২ নং সেক্টর ৩ নং রোড