এনসিটিবি ৫ ঘণ্টার পরীক্ষা নিয়ে কী বলছে ?

News News

Desk

প্রকাশিত: ৪:০৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক : নানা সমালোচনার পর নতুন কারিকুলাম বা শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন (অ্যাসেসমেন্ট) পদ্ধতি নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

এনসিটিবি বলছে, স্কুল সময়ে (সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা) প্রতিদিন একটি বিষয়ের মূল্যায়ন করার জন্য প্রস্তাবনার খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

এতে টানা পাঁচ ঘণ্টা বসে পরীক্ষা দিতে হবে না। এক ঘণ্টার মধ্যাহ্ন বিরতি থাকবে। আর বিষয়ভেদে এক থেকে দেড় ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা হবে।

খসড়া মূল্যায়ন প্রস্তাবনা অনুযায়ী, প্রতিটি বিষয়ে মিডটার্ম ও বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে পাঁচ ঘণ্টার। পাঁচ ঘণ্টায় হবে এসএসসি ও এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষাও।

পাবলিক পরীক্ষা হবে অন্য কেন্দ্রে। আর চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির এ পরীক্ষা হবে নিজ নিজ স্কুলে। সকাল ১০টা থেকে এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বা পরীক্ষা শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। মাঝখানে এক ঘণ্টার বিরতি থাকবে।

সোমবার (২৫ মার্চ) এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, এগুলো এখনো আলোচনার পর্যায়ে আছে। কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যে প্রস্তাবনার কথা বলা আছে, তা পাঁচ ঘণ্টা। এগুলো আমরা প্রস্তাব করেছি। যখন ফাইনাল (চূড়ান্ত) হবে, তখন আমরা জানিয়ে দেব।

মশিউজ্জামান বলেন, আমরা গতবার যে পরীক্ষা (অ্যাসেসমেন্ট) নিয়েছি, সেটি তিন দিনে। সেটির নাম ছিল অ্যাসেসমেন্ট উৎসব। ওরা (শিক্ষার্থী) প্রথম দিনে ইনস্ট্রাকশন পেয়েছে, দ্বিতীয় দিনে ডাটা প্রসেস করেছে, তৃতীয় দিনে ফাইনাল রেজাল্ট দিয়েছে। তিনটি ভাগে কাজটি করেছে।

‘আমরা এর পরে জানতে পারি, প্রতিদিন ক্লাস রুটিন অনুযায়ী সেগুলো হচ্ছিল। তারা বলেছিল একই দিনে যখন একাধিক বিষয়ের কাজ করতে হয়, তখন তা কঠিন হয়ে পড়ে। এখন আমরা বলেছি, এক দিন একটি বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে। ওই বিষয় ছাড়া সেদিন আর অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে না। ’

নতুন মূল্যায়ন প্রস্তাবনার ব্যাখ্যা দিয়ে এনসিটিবির এ সদস্য বলেন, পাঁচ ঘণ্টা মানে হলো স্কুল সময়ের পাঁচ ঘণ্টা, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সেখানে ছয় ঘণ্টার মধ্যে মাঝখানে এক ঘণ্টা নামাজ এবং মধ্যাহ্ন বিরতি দিয়ে বাকি পাঁচ ঘণ্টা তারা কাজ করবে। একটি এক্সপেরিমেন্ট দেওয়া হবে। তারা সকাল ১০টা থেকে শুরু করবে। শেষ সময়ে এক ঘণ্টা বা বিষয় অনুযায়ী সোয়া এক ঘণ্টা একটি লিখিত অংশ থাকবে। সেই সময় লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে। বাদ বাকি সময় তাদের অ্যাকটিভিটিজে যাবে।

এখানে যে পাঁচ ঘণ্টা বসে বসে লিখিত পরীক্ষা দিচ্ছে, আগের তিন ঘণ্টার পরীক্ষার মতো, বিষয়টি তা নয়।

মশিউজ্জামান বলেন, স্কুল যেভাবে করে সেভাবেই করবে। পাবলিক পরীক্ষার সেন্টারে যেতে হবে। পাবলিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাইরের অ্যাসেসর থাকবেন অর্থাৎ অন্য স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অ্যাসেসমেন্ট করবেন।

সেখানে শিক্ষার্থীরা সারাদিন যে কাজ করবে, গতবার আমরা ফাইনাল পরীক্ষা যেমন করে নিয়েছি, সেভাবেই তাদের কাজ দেখা হবে এবং অবজারভেশন-চেকলিস্ট অনুযায়ী তাদের অ্যাসেস করা হবে। ফাইনালি তারা একটি লিখিত রূপ জমা দেবে।

সেটি বোর্ডের পরীক্ষার খাতায় করবে। কোনো বিষয়ের জন্য এক ঘণ্টা, কোনো বিষয়ের জন্য সোয়া এক ঘণ্টা, কোনো বিষয়ের জন্য দেড় ঘণ্টা হতে পারে। এর বেশি আসলে হবে না। তার মানে পাঁচ ঘণ্টা বসে বসে তারা লিখছে, এটা কেউ মনে করলে সেটি ভুল।

শ্রেণিভিত্তিক পরীক্ষা বা মূল্যায়ন নিয়ে এনসিটিবি সদস্য মশিউজ্জামান বলেন, এসএসসি, এইচএসসিতে পাবলিক পরীক্ষা থাকবে। পঞ্চম, অষ্টম শ্রেণিতে নেই। দশম শ্রেণির ভিত্তিতে এসএসসি পরীক্ষা হবে। তারপর একাদশের একটি পরীক্ষা হবে। তারপর দ্বাদশের একটি পরীক্ষা হবে। ষষ্ঠ থেকে নবম পর্যন্ত স্কুলের পরীক্ষা ছাড়া কোনো পাবলিক পরীক্ষা থাকবে না। এসএসসি ও এইচএসসিতে পাবলিক পরীক্ষা হবে।

পুরোনো কারিকুলাম অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের তিন ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। আর পৃথক দিনে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও ভিন্ন হচ্ছে।

পরীক্ষা ও মূল্যায়ন নিয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে এ খসড়া মূল্যায়ন প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এনসিসিটিবি। এটি মন্ত্রণালয়ের পাঠানোর পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালে প্রথমবার ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম শুরু হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবমে এবং ২০২৫ সালে নতুন কারিকুলাম চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে। নতুন কারিকুলামে এসএসসি পরীক্ষা হবে ২০২৬ সালে।

 

 

 

 

 

সূত্র :বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর