ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ রোজা News News Desk প্রকাশিত: ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০২৪ অনলাইন ডেস্ক : ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি রোজা। রোজার প্রতিদান মহান আল্লাহ নিজ হাতে দানের ঘোষণা দিয়েছেন। এ রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৩)। কোরআনে এসেছে, ‘সিয়াম নির্দিষ্ট কয়েক দিনের। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে অথবা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূর্ণ করবে। এটা যাদের অতিশয় কষ্ট দেয় তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদিয়া- একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্যদান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৪)। সূর্যাস্তের পর পানাহারের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করাকে ইফতার বলে। ইফতার করা রসুল (সা.)-এর সুন্নত। রসুল (সা.) তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করা পছন্দ করতেন। না পেলে শুকনো খেজুর। তা না জুটলে পানি পান করতেন। রোজার সঙ্গে ইফতারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। রোজাদার নিজেও ইফতার করবে এবং সম্ভব হলে অন্যকেও এতে শরিক করবে। রোজাদারদের ইফতারে শরিফ করার মধ্যে বিশেষ বরকত ও সওয়াব রয়েছে। সারা দিন রোজা রেখে শরীর আসরের পর থেকে নেতিয়ে যায়। এ অস্বস্তিকর সময়ে ইফতারের বিধান আল্লাহর পক্ষ থেকে রোজাদারের জন্য নিয়ামতস্বরূপ। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে। খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। পানি হলো অধিক পবিত্র।’ (আবু দাউদ)। তিনি বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে- এক. ইফতারের সময় (যখন রোজাদাররা ইফতারিসামগ্রী নিয়ে দোয়া-দরুদ পড়তে পড়তে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করে) এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়।’ (বুখারি, মুসলিম)। সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করতে হবে। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘লোকেরা ততক্ষণ কল্যাণের মধ্যে থাকবে যতক্ষণ তারা ইফতার জলদি করবে।’ (বুখারি, মুসলিম)। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় সেই বান্দা, যে ইফতার সঠিক সময়ে করে। (তিরমিজি)। ইফতারের সময় হলে দেরি করা যে উচিত নয় উপরোক্ত হাদিসটি তারই প্রমাণ। যদি কেউ ইচ্ছা করে ইফতারে দেরি করে তাহলে সে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশ অনুযায়ী কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে এবং আল্লাহর কাছে অপ্রিয় হবে। সুতরাং সময়মতো ইফতারের ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। ইফতারের মাধ্যমে যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায় তেমনি অন্য রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলতও অনেক। রসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার জন্য গুনাহ মাফ এবং দোজখের আগুন থেকে নাজাতের উসিলা হবে এবং ওই রোজাদারের সমান সওয়াব সেও লাভ করবে। (মিশকাতুল মাসাবিহ)। মানুষকে পরহেজগারিতা শেখায় রোজা। এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে এবং কেউ অসুস্থ থাকলে কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না, এ জন্য যে তোমাদের সংখ্যা পূর্ণ করবে এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করবে এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৫)। রোজার মাসে স্ত্রী সহবাস কখন করবে। এ সম্পর্কে কোরআনে এসেছে, ‘সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য এবং তোমরাও তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন তোমরা তোমাদের নিজেদের সঙ্গে অবিচার করছিলে, এরপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হয়েছেন এবং তোমাদের মার্জনা করেছেন, সুতরাং এখন তোমরা তাদের সঙ্গে সংগত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করে রেখেছেন (অর্থাৎ সন্তান) তা অন্বেষণ কর। আর তোমরা আহার কর ও পান কর যতক্ষণ তোমাদের জন্য (রাতের) কালো রেখা থেকে ফজরের সাদা রেখা স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায় তাদের সঙ্গে সংগত হইও না। এগুলো আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমা, সুতরাং এর নিকটবর্তী হইও না। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্য তার আয়াতগুলো স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করতে পারে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৭)। SHARES ইসলাম বিষয়: