আমেরিকা-ইউরোপে লবিস্ট নিয়োগ করে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিএনপি : সেতুমন্ত্রী News News Desk প্রকাশিত: ১০:২৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২৩ অনলাইন ডেস্ক : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমেরিকা-ইউরোপে লবিস্ট নিয়োগ করে বিএনপি অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদ ওবায়দুল কাদের। একইসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালকে কাজে লাগিয়েও দলটি অপপ্রচারের নেমেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সোমবার (১৯ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে জাতীয় সংকট, বিশ্ব সংকটের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। অর্থনৈতিক সংকট রাজনৈতিক সংকটের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে এখানে আমাদের দেশে একটা পোলারাইজেশন হচ্ছে এবং একটা ডিভাইসিভ অ্যাটিটিউট গড়ে উঠছে। এখানে পরস্পরবিরোধী মতের প্রদর্শন হচ্ছে। আমরা আশা করবো, দেশে শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবো। বিএনপির নেতৃত্বে একটি মহল এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা নিজেরা ব্যর্থ হয়ে এখন বিদেশি শক্তিকে কাজে লাগাতে চায়। বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার তারা করছে। যে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হওয়ার কথা, যে নির্বাচন আমাদের এই প্রথম একটা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে…এর আগে নির্বাচন কমিশন ছিল প্রধানমন্ত্রী অফিসের অধীনে। এবারই প্রথম একটি নির্বাচিত নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচিত করেছ, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে নির্বাচন ব্যবস্থাকে আরো কর্তৃত্বপূর্ণ, আরো স্বাধীন করার পদক্ষেপে নিয়েছে। এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য সরকারিভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়াটা অতীতে কখনো ছিলো না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে বিএনপির এই নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয় আছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বোঝে শেখ হাসিনার যে জনপ্রিয়তা এই অবস্থায় নির্বাচন হলে নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবে না। কাজেই এই নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও বাধাগ্রস্ত করা এটা হলো এখন তাদের কাজ। এই কাজ করতে গিয়ে তারা বিদেশিদের কাছে তারা নালিশ করছে। এখন তারা পরিস্কারভাবে যেটা দেখতে পাচ্ছি, তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। আমেরিকা, ইউরোপে তারা লবিস্ট নিয়োগ করেছে। সর্বশেষ যে খবর পেয়েছি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে অপপ্রচারের সঙ্গে তাদের অপপ্রচার একাকার হয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি যাতে অতীতের মতো অগ্নিসন্ত্রাসের মতো কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে, সেজন্য শান্তি কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকার কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমাদের লড়াই করতে হবে অশান্তির বিরুদ্ধে শান্তির জন্য। নির্বাচনের পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে, কেউ যাতে বাধা দিতে না পারে। তাদের সংঘাত, উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিপরীতে আমরা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আমরাও মাঠে থাকবো। আমরা অশান্তির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবো। আমরা সংঘাতের বিরুদ্ধে শান্তি চাই। নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা আসুন, বিএনপি আপনাদের কাছে যেটা নিয়ে নালিশ করে সেই নির্বাচনটা বাংলাদেশে কিভাবে হচ্ছে, কয়েকটা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো কিভাবে হয়েছে; এটা বিভিন্ন দেশের দূতাবাস আছে, তাদের লোকজন আছে তারা এটা প্রত্যক্ষ করেছে। আগামী নির্বাচনে আমাদের নেত্রী গ্যারান্টি দিয়েছে, বিদেশে গিয়েও বাংলাদেশে যে কোনো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। এটার নিশ্চয়তা প্রধানমন্ত্রী নিজে দিয়েছেন। আমরা সেকথাও আবারো বলছি, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বদ্ধ পরিকর। ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন বিএনপির ব্যাপারটা হচ্ছে আমরা নির্বাচনে হেরে আমাদের প্রমাণ করতে হবে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। বিএনপি না জিতলে এই নির্বাচন কখনো অবাধ হবে না, কোনোদিন অ্যাকসেপ্টঅ্যাবল (গ্রহণযোগ্য) হবে না, বিশ্বাসযোগ্য হবে না। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে ‘ফ্যাথলজিক্যাল লায়ার’ আখ্যা দিয়ে কাদের বলেন, ‘এতো মিথ্যা কথা বলতে পারে। কুত্তা নির্বাচন বলে তারা। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা যদি মিনিমাম গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাহলে কুত্তা নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার মুখে আসে! শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে? এই কথাটা আমি উইড্র করতে বলেছি। এই ধরনের কথা তাদের মুখে আসে! দলের আগামী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপনের কথা জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সাদামাটা অনুষ্ঠান হবে এবং মাসব্যাপী অনুষ্ঠান হবে। আগামী ২২ জুন নির্বাহী কমিটির সভার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সভায় দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা হবে। যে নেতাদের বিভাগীয় দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট নেবেন। কোথাও কোনো সংকট থাকলে সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত দেবেন। তিনি জানান, মিটিংয়ে জেলায়, উপজেলায় আমাদের দলের কিছু কর্মসূচি ঠিক করা হবে এবং কিছু কিছু জেলাকে পর্যায়ক্রমে ঢাকায় আমন্ত্রণ করে তাদের বিভিন্ন জায়গায় যে সমস্যা সে সম্পর্কে অবহিত হবেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেবেন। এ সময় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক প্রমুখ উপস্থিতি ছিলেন। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন SHARES জাতীয় বিষয়: