আগামী অর্থবছরে সারের দাম বাড়ানো হবে না: কৃষিমন্ত্রী News News Desk প্রকাশিত: ৪:০৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০২৩ অনলাইন ডেস্ক : অর্থ মন্ত্রণালয় চাপ দিলেও বলে নিশ্চিত করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আগামী অর্থবছরে (২০২৩-২৪) দেশে ৬৮ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টন রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হবে। সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সারবিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান। এসময় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, কৃষি মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘গত চার বছরে প্রধানমন্ত্রী সারের দাম এক টাকাও বাড়াননি। অর্থ মন্ত্রণালয় বারবার আমাদের ওপর চাপ দিচ্ছে যে, সারের দাম বাড়ান, আমরা অর্থ যোগাড় করতে পারছি না, আমরা আপনাদের অর্থ দিতে পারছি না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী অনড়, তিনি কিছুতেই সারের দাম বাড়াবেন না। রাজ্জাক বলেন, এ পরিপ্রেক্ষিতে আজকেও আমরা আলোচনা করেছি। এ বছরও আমাদের সারের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। সারের দাম বাড়ানো হবে না। কৃষক যেন পর্যাপ্ত পরিমাণ সার পায় সেজন্য সভায় সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৮ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টন সারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ডিএপি লাগে ৫ থেকে ৬ লাখ টন। এটির দাম কমানোর জন্য চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ লাখ টন। টিএসপি সাড়ে সাত লাখ টন ও এমওপির চাহিদা ধরা হয়েছে ৯ লাখ টন। এখন কী পরিমাণ সার মজুত আছে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চার লাখ টন ইউরিয়া মজুত আছে। টিএসপি দুই লাখ টন, ডিএপি আড়াই লাখ টন, এমওপি সোয়া দুই লাখ টন মজুত আছে। গত বছরের তুলনায় সবগুলোই কিছু কিছু কম আছে। করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের পরে বিশ্ববাজারে সার পরিস্থিতি তুলে ধরতে তিনি আরও জানান, আগে ২৫০ ডলার প্রতিটনে আমরা পটাসিয়াম সার কিনতাম। সেই সার আমরা এক হাজার ২০০ ডলারেও কিনেছি। এখনও তা ৭০০ থেকে ৮০০ ডলারে কিনতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমে আসছে। কিন্তু যেভাবে কমছে, তাতে আগের অবস্থায় যাচ্ছে না। গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত থাকলে খুবই কম পরিমাণ সার বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। শাহজালাল সার কারখানা হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) সক্ষমতা অনেক বেড়ে গেছে। আপনারা জানেন, গত দুই-তিন বছরে ঠিকমতো গ্যাসের সরবরাহ হচ্ছে না। মাঝে মাঝে সার কারখানাগুলো বন্ধ রাখতে হয়। তিনি বলেন, একটি সার কারখানা বন্ধ করে আবার নতুন করে চালু করতে গেলে যে প্রেসার উৎপাদন করতে হয়, তাতে পাঁচ থেকে সাত কোটি টাকা খরচ হয়ে যায়। বেশিদিন বন্ধ থাকলে কারখানা অচল হয়ে যায়। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে বিসিআইসি উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। যদিও প্রয়োজনীয় সার উৎপাদন সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ইউরিয়া সার যতটা সম্ভব স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করতে আমরা উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করব। জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে আমরা অনুরোধ করব, তারা যেন সার কারখানাগুলো সচল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ রাখে। গ্যাসের দাম বাংলাদেশে কম হওয়াতে স্থানীয়ভাবে সার উৎপাদন খরচও বেশি না। তা সত্ত্বেও যদি একেবারে আন্তর্জাতিক দামে যদি বিসিআইসি মন্ত্রণালয়কে দেয়, তাতেও দাম আমাদের অনেক কম পড়বে। কামরুল আশরাফ খান পোটন নামের নরসিংদীর সাবেক একজন সংসদ সদস্য ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, তাকে আমরা কালো তালিকাভুক্ত করেছি। তিনি আমাদের এখানের কোনো দরপত্রে অংশ নিতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। উল্টো তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কীভাবে যেন আদালত তাদের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা কতটুকু পাওয়া গেছে জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী বলেন, আগামী বছরগুলোতে যাতে সার সংকট না হয়, কারখানাগুলো যাতে সচল রাখতে পারি, তা নিয়েই আমরা বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম যেহেতু বেড়ে গেছে, সেহেতু আমদানির চেয়ে আমাদের কারখানাগুলো সচল রাখতে পারলে লাভ বেশি হয়। কারণ আমরা আমদানি নির্ভরতা কমাতে চাই। কারখানাগুলো নিজেদের সক্ষমতা অনুসারে সচল রাখার চেষ্টা করছি। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বিল বকেয়া রয়েছে, তা আদায়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রথমে বলতে চাচ্ছি, আমাদের কোনো বকেয়া নেই। সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম SHARES অর্থনৈতিক বিষয়: