আজ ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন

News News

Desk

প্রকাশিত: ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আজ মঙ্গলবার। রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকাল সাড়ে ১০ টায় সম্মেলন শুরু হবে।

এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলন সফল করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের দীর্ঘ প্রতিক্ষীত এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সঞ্চালনায় থাকবেন বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘আমরা সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের আবেদনপত্র নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই নতুন কমিটি হবে।

জানা গেছে, ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে আসতে প্রার্থী হয়ে ফরম জমা দিয়েছেন ২৫৪ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদপ্রত্যাশী ৯৬ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৮ জন। পদ দুটিতে কারা আসছেন, সেদিকে সবার কৌতূহলী চোখ। ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ফরম সংগ্রহ এবং জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রলীগের এবারের নেতৃত্ব বাছাইয়ে যোগ্যতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে সাংগঠনিক দক্ষতা, কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, নেতৃত্বের যোগ্যতা, মেধা এবং আওয়ামী পরিবারের সন্তান হওয়া।

এর সঙ্গে অতীতের আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা, নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, বয়সের সীমারেখার বিষয়টিও আছে। এ ছাড়া একাধিক জরিপের ফলাফল তো থাকবেই। জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি এবং করোনাকালে মানবিক হিরোরা স্থান পেতে পারেন শীর্ষ নেতৃত্বে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে জমা পড়া ফরমগুলো আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। ফরমে উল্লেখ করা তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে সংক্ষিপ্ত একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

সেটি ছাত্রলীগের অভিভাবক আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁর পরামর্শেই চূড়ান্ত হবে নতুন নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হতে পারে আজকের সম্মেলন থেকে।

ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ছাত্রলীগের সম্মেলন শেষ হয়েছে। জানা গেছে, সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য বিরাজ করছে। উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনাও দেখা যাচ্ছে অনেক বেশি। সংগঠনের দুই শীর্ষ পদে কারা আসছেন তা নিয়ে প্রতিবারের মতো এবারও চলছে নানা আলোচনা।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, যারা ত্যাগী এবং বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থী ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন তাদেরই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে ছাত্রলীগের কমিটিতে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা, আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়তা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও অবদান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভূমিকা এবং পরিবারের রাজনৈতিক মতাদর্শও গুরুত্ব পাবে।

ছাত্রদল বা শিবিরের সম্পৃক্ততা কিংবা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকলে তারা কমিটিতে আসবেন না।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের বয়সসীমা অনূর্ধ্ব ২৭ বছর। অর্থাৎ ২৭ বছরের বেশি বয়সীরা ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকতে পারবেন না। বিগত তিন কমিটির সম্মেলনে প্রার্থীদের বয়স অনূর্ধ্ব ২৯ বছর করা হয়। এবার কত বছর সীমা থাকবে তা প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, করোনার কারণে এবার আরও এক বছর ছাড় পেতে পারেন নেতৃত্বে আসার বয়সীমায়।

ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের পর ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পূর্ণ মেয়াদ শেষ করার আগেই আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান যথাক্রমে আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য। তিন মাস ভারপ্রাপ্ত থাকার পর ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাদের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মেয়াদ দুই বছর।

মেয়াদকালের মধ্যে সম্মেলন আয়োজন করার নিয়ম থাকলেও তা করতে পারেননি জয়-লেখক। গত ২১ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ৮ ও ৯ ডিসেম্বর সম্মেলনের ঘোষণা দেন ছাত্রলীগ সভাপতি।

১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ। তারা যাতে নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে পারে সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সম্মেলনের তারিখ এগিয়ে আনা হয়েছে। সে কারণে আজ ৬ ডিসেম্বর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন