দেশে ফের বেড়েছে চাল–সবজি–মাছ–মুরগির দাম

News News

Desk

প্রকাশিত: ৮:২৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : দেশে নানা ছুতোয় গত কয়েক মাস ধরেই অস্থিতিশীল নিত্যপণ্যের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে চাল, সবজি, মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম।

বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ার জন্য বরাবরের মতোই খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন পাইকারদের। আর পাইকাররা দিচ্ছেন দায়সারা ব্যাখ্যা।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল, বাড্ডা, রামপুরার কাঁচাবাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম ৫-১০ টাকা বেড়েছে।

গত সপ্তাহে ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এ ছাড়া ৩৫ টাকার পটোল ৪০-৪৫, বেগুন (গোল) ৫০-৫৫, টমেটো ১১৫, গাজর ১২০, করলা ৬০-৬৫, শসা ৫০-৬০ ও শিম ১৫০, ৩৫ টাকার কাঁচা মরিচ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজি ছাড়াও ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ ও ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়েছে।

ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম একবারে না বাড়িয়ে দফায় দফায় বাড়ানো অসাধু ব্যবসায়ীদের অপকৌশল। তারা ভেবেছে এভাবে পণ্যের দাম বাড়ালে মানুষ কিছুই বুঝতে পারবে না। কিন্তু বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়ার আদতে কোনো যুক্তি নেই। এটা শুধুই ব্যবসায়ীদের কারসাজি।

বাড্ডা বাজারে বেসরকারি চাকুরে জীবন আহমেদ বলেন, ‘মাসিক বেতনের সঙ্গে বাজারের হিসাব মিলে না। তাই তো এখন মানসিকভাবে মেনেই নিয়েছি বাজারে গেলে বেশি টাকায় অল্প সদাই নিয়ে ফিরতে হবে। খেতে বসলে কম কম খেতে হবে।

একই বাজারে আসা মাহমুদ নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘দেশের ব্যবসায়ীরা ফেরেশতা। শুধু পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য বৃষ্টি বা অন্য কোনো একটা সুযোগ পেলেই মানুষের গলা কাটে। সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটি আছে তাদের মতো ঘুমিয়ে!

এদিকে গত তিন মাসের তুলনায় গেল ১০ দিনে চালের দাম সামান্য কম থাকলেও আবার তা দ্বিগুণ বেড়েছে। পাইকারিতে মাঝারি মানের চাল (পাইজাম, ব্রি-২৮, লতা) বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা কেজি। ভোক্তারা খুচরা বাজরে এ চাল কিনছেন ৫৫-৫৬ টাকা কেজিতে।

আর পাইকারিতে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা কেজি; যা খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। পাইকারিতে ৬৯-৭১ টাকায় বিক্রি হওয়া চাল খোলাবাজারে ৭৩-৭৫ টাকার নিচে বিক্রি করছেন না বিক্রেতারা।

দাম বাড়া প্রসঙ্গে মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘ভারতে চালের শুল্ক বাড়ানোর পরই নতুন করে মিলাররা দাম বাড়িয়েছে। তারা ইস্যু খুঁজে পেলেই চালের দাম বাড়িয়ে দেয়। বাজার কখনো স্থিতিশীল থাকে না।

রামপুরা বাজারের এক মুদিদোকানি বলেন, ‘চালের বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। গত সপ্তাহে দেশে চালের দাম কিছুটা কমেছিল। কিন্তু ভারতে শুল্ক বাড়ানোর পর আবার বেড়ে গেছে।

মিলারদের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে আছে। তাদের জরিমানা করা হয় না। ঢাকার বাজারে এসে সাধারণ ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হয়। অথচ চালের দরে কারসাজি করে মিলাররা।

ফার্মের মুরগির ডিম ও মুরগির বাজারেও একই চিত্র দেখা গেছে। গত সপ্তাহে ১৭০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০-১৮৫ টাকা। দেশি মুরগি ৫৫০, সাদা কক মুরগি ৩২০ ও লেয়ার মুরগির কেজি ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে ১৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি ডজন ডিম আরও ১০ টাকা বেড়ে খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা করে।

এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত এক মাসে সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ৩০-৫০ টাকার বেশি বেড়েছে। বাজারে ২০০ টাকার নিচে তেলাপিয়া মাছ পাওয়া যাচ্ছে না; যা গত মাসের শুরুর দিকেও ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি হতো।

এ ছাড়া ২৫০ গ্রাম ইলিশের কেজি ৫০০, ৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১ হাজার ৪৫০, পাঙ্গাশ ১৮০, মাঝারি রুই ২৮০, চাষের কই ২৩০, নলা মাছের কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সূত্র : দেশ রূপান্তর