ডাকসুতে ভরাডুবি বাগছাসে সংস্কারের চিন্তা বদলে যেতে পার নামও

News News

Desk

প্রকাশিত: ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভরাডুবির পর সংস্কার হতে যাচ্ছে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)। সংগঠনের নাম পরিবর্তনসহ কিছু সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

গত ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসুর ২৮ পদের একটিতেও জিততে পারেননি বাগছাস সমর্থিত ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের প্রার্থীরা। ভোটের হিসাবে সংগঠনের ভিপি ও জিএস প্রার্থীর অবস্থান পঞ্চম। ২৩টি পদে জিতেছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’। চারটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা (দুজন আবার শিবিরের ডামি) এবং একটি সদস্য পদে জিতেছেন বামপন্থিদের প্যানেল ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’।

অবশ্য ১১ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে বাগছাস সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা তুলনামূলক ভালো করেছেন। বিজয়ী ছাত্রশিবির ও স্বতন্ত্রদের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছেন তাদের প্রার্থীরা।

ডাকসুতে ফল বিপর্যয়ের পর বাগছাসে সংস্কারের আলোচনা শুরু হয়। গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর বাংলামটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় অনেক নেতা শোচনীয় পরাজয় নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। পরাজয়ের পেছনে বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেন তারা।

সূত্র জানায়, এনসিপি নেতাদের বক্তব্যে ডাকসুতে পরাজয়ের পেছনে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভাজনের বিষয় উঠে আসে। প্রার্থীদের অনভিজ্ঞতা ও প্রচারে কার্যকর কৌশল নিতে না পারার কথাও উল্লেখ করেন অনেকে।

বাগছাস যে এনসিপির ছাত্র সংগঠন– এতদিন দুপক্ষ থেকেই অস্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু ডাকসুর ফলাফলের পর অস্বীকারের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার কথা ভাবছে এনসিপি। শিগগির কনভেনশন ডেকে সবার সঙ্গে পরামর্শ করে সংগঠনে সংস্কার আনতে এনসিপির পক্ষ থেকে বাগছাসকে বলা হয়েছে।

এনসিপির একাধিক নেতা মনে করেন, ছাত্র সংগঠনের নাম হিসেবে বাগছাস ভালো হয়নি। কনভেনশনে আলোচনা করে প্রয়োজনে নামটি পরিবর্তন করা হবে। বিষয়টি ইতোমধ্যে বাগছাস নেতাদের বলেছে এনসিপি। এনসিপির অঙ্গ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের নামের শেষে ‘শক্তি’ শব্দ রয়েছে। জাতীয় যুবশক্তির মতো ছাত্র সংগঠনের নামের শেষে এই শব্দটি রাখার বিষয়ে মতামত দেন এনসিপির নেতারা।

তারা মনে করছেন, ছাত্র সংগঠন নিয়ে আর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা ঠিক হবে না। সরাসরি এনসিপির ছাত্র সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পর্যায়ে কমিটি থাকবে– এটাও চাইছেন নেতারা। যদিও এসব বিষয়ে সিদ্ধান্তের ক্ষমতা বাগছাস নেতাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তারা।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের একাংশের উদ্যোগে গত ফেব্রুয়ারিতে বাগছাস আত্মপ্রকাশ করে। কার্যক্রম স্থগিত হওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি (সাবেক সমন্বয়কদের একাংশের পূর্বতন ছাত্র সংগঠন) ও অভ্যুত্থানের সময় ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করা শিক্ষার্থীদের অনেকে এ সংগঠনে যোগ দেন। ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীও আছেন– ক্যাম্পাসে এমন চাউর রয়েছে।

ডাকসু নির্বাচনে বাগছাস সমর্থিত প্যানেলে ভিপি প্রার্থী ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ৯ দফা ঘোষণা করে আলোচনায় আসা সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের। জিএস প্রার্থী ছিলেন সম্মুখসারির আরেক সাবেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার। ডাকসু নির্বাচনের জন্যই তারা এনসিপিতে যোগ দেননি বলে মনে করা হয়। নির্বাচন ঘিরে গত এক বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নানা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন আবদুল কাদের ও বাকের মজমুদার। তাদের প্যানেলের অন্য প্রার্থীরাও ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ।

আবু বাকের মজুমদার জানান, এনসিপির সঙ্গে তাদের আদর্শিক মিল রয়েছে। কিন্তু এনসিপির লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে বাগছাস আত্মপ্রকাশ করবে না। তারা স্বতন্ত্রই থাকবে।

ডাকসুর ব্যর্থতা বিষয়ে তিনি বলেন, ডাকসুতে আমাদের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ কতিপয় ব্যক্তি অন্য এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বাগছাসে এসেছেন। সংগঠন পুনর্গঠন দরকার– এটি নিজেরাও উপলব্ধি করছি।

জানতে চাইলে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের ফলাফলের পর এখন কীভাবে ছাত্র সংগঠনকে পুনর্গঠন বা শক্তিশালী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রয়োজনে ছাত্র সংগঠনের নাম পরিবর্তন করা হতে পারে।


প্রকাশক : শারমিন সুলতানা
সম্পাদক : মো:সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়
সহ সম্পাদক : মো:শুভ হাওলাদার।
প্রধান উপদেষ্টা : মো: মকবুল হোসেন
যুগ্ন উপদেষ্টা : ডা. রিয়াদুল ইসলাম খান

 

বরিশাল ঠিকানা::
বিবির পুকুর পাড়
হাবিব ভবন, ৫ম তলা

ঢাকা ঠিকানা::
উওরা ১২ নং সেক্টর ৩ নং রোড