সারাদেশে শীতের তীব্রতা বাড়ার পূর্ভাবাস আবহাওয়া অধিদপ্তরের

News News

Desk

প্রকাশিত: ১০:০৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক : দুই বাচ্চাকে নিয়ে নিলীমা ইয়াছমিনের প্রতিদিনই স্কুলে যেতে হয়। বড় ছেলে দানিয়ালের ঠাণ্ডা-সর্দি থাকায় বাসাতেই থাকছে।

তবু দিনভর গায়ে চাপিয়ে রাখতে হয়েছে সোয়েটার। ছোট ছেলে ইব্রাহীমও ছাড়তে চায়নি গরম পোশাক। নিলীমা বললেন, ‘কদিন থেকেই রাজধানীতে শীত পড়েছে বেশ। তবে আজকে সারাদিন আর হিমহিম ভাব গেলো না।

আবহাওয়া অফিস যদিও বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে বলেছিল, আকাশ আংশিক মেঘলা এবং আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক। হয়েছে প্রায় উল্টো। আকাশ আংশিক মেঘলা নয় বরং রোদ মিলেছে আংশিক। ফলে বাতাস শুষ্ক থাকায় তাপমাত্রাও নেমে এসেছে অনেক। আর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় বেড়েছে শীতের অনুভূতি।

ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ তাপমাত্রার পার্থক্য নেমে এসেছে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম। তাই রাজধানীতে শীতের অনুভূতিও সবচেয়ে বেশি।

শীতকাল বলতে যা বোঝায়, সেই পৌষ মাসের আরও তিনদিন বাকি। তাই উত্তর-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর দাপট ধীরে ধীরে আরও বাড়বে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত বছর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রিতে নেমেছিল। এবারও তেমন হতে পারে। তবে শীতের তীব্রতা সর্বনিম্ন ৪ ডিগ্রিতে নামার আভাস রয়েছে।

নিলীমা ইয়াছমিন বলেন, ‘স্কুলের শীতকালীন ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাব ভেবেছিলাম। শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকলে আর যাওয়া হবে না। ’

এদিকে এবারের শীতটা যেন হুট করেই এসেছে, এমনটা মনে করছেন অটোরিকশাচালক রমিজ মিয়া। তিনি বলেন, ‘শীত আসে না, আসে না করতে করতে হুট কইরা চইলা আইলো। আর রাইতে কয়েকগুণ বেশি ঠাণ্ডা লাগে। ’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে। তবে তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। এছাড়া ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চালে এক থেকে দুটি মৃদু (০৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা মাঝারি (০৬-০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

এছাড়া নদী অববাহিকায় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আগামী তিন দিনের পূর্বাভাসে সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগরের শ্রীলঙ্কা উপকূলে অবস্থান করছে।

এটি ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় বিহার এবং তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

এই অবস্থায় শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-উত্তর পূর্বাংশের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।

সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম