বিসিসি’র কাউন্সিলর প্রার্থীদের বেশির ভাগই ব্যবসায়ী News News Desk প্রকাশিত: ৭:৪৭ অপরাহ্ণ, মে ৩১, ২০২৩ অনলাইন ডেস্ক : বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) ১৭নং ওয়ার্ডের চা-দোকানি ওবায়েদ চৌধুরী। পরপর দুইবারের নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অষ্টম শ্রেণি পাস এই প্রার্থী নিজেকে জনসেবায় সম্পৃক্ত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। একই ওয়ার্ডে স্থানীয় একটি পত্রিকার ফটো সাংবাদিক সালাউদ্দিন সিকদারও চাচ্ছেন কাউন্সিলর হয়ে জনসেবা করতে। আবার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মরতুজা আবেদীন স্নাতকোত্তর পাস। পাশাপাশি তিনি এলএলবিও সম্পন্ন করেছেন। ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম খোকনও এলএলবি পাস। ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ওবায়দুল হক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার পরও পেশা হিসেবে ব্যবসাকে বেছে নিয়েছেন। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১১৯ কাউন্সিলর প্রার্থীর হলফনামা পর্যালোচনা করে শিক্ষা ও পেশায় এমন বৈচিত্র্য পাওয়া গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, জনপ্রতিনিধির মানদণ্ড শুধু বিত্তশালী আর একাডেমিক শিক্ষায় উচ্চ সনদধারীই যথেষ্ট নয়। জনপ্রতিনিধিত্বের কেন্দ্রবিন্দু সেবার মানসিকতা। নির্বাচন এলেই ব্যবসায়ীরা রাজনীতিতে প্রবেশের যে চেষ্টা করেন তা উদ্বেগের। ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মোট ১১৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে গণমাধ্যমে দেওয়া তাদের হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্যে ৫৮ শতাংশই ব্যবসায়ী। ১৩ শতাংশের পেশা ঠিকাদারি। অন্যান্য ২৯ শতাংশের পেশার মধ্যে শিক্ষক, শিল্পী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও কৃষক রয়েছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক দিয়েও সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। হিসেব বলছে, সবচেয়ে বেশি ৬০ শতাংশ প্রার্থী এইচএসসি থেকে স্নাতকোত্তর পাস। আর সবচেয়ে কম স্বশিক্ষিত ৫ শতাংশ। এসএসসি পাস প্রার্থী ১৯ শতাংশ এবং অষ্টম শ্রেণি পাস ১৬ শতাংশ। সরকারি ব্রজমোহন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এমএন তারিকুজ্জামান মনে করেন উচ্চশিক্ষা ও ব্যবসায়ী হওয়ার পজিটিভ আবার নেগেটিভ দিকও রয়েছে। প্রথমত ব্যবসায়ী ও উচ্চশিক্ষিতরা নির্বাচনে আসায় আমি আশাবাদী। তাদের দ্বারা জনসেবা সম্ভব। কেননা ব্যবসায়ী বলতে আমি ভালো ব্যবসা; কোনো কালোবাজারি কিংবা অসৎকে বুঝি না। ভালো ব্যবসায়ীরা এলে বরাদ্দের বাইরে জনসেবার জন্য নিজেও কিছু করতে পারেন। আবার উচ্চশিক্ষিতরা জনপ্রতিনিধি হলে সবার সঙ্গে কীভাবে আচার-আচরণ করতে হবে, কীভাবে জনকল্যাণকর উদ্যোগে নিতে হবে তার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে ভয়ংকর রকমের বিপরীত চিত্রও রয়েছে। ব্যবসায়ী যদি জনপ্রতিধিত্বকে ব্যবসা হিসেবে নেন তাহলে জনগণের জন্য অভিশাপ। তাছাড়া উচ্চশিক্ষিত হলেই যে তিনি জনসেবা করবেন সেটা নিশ্চিত নয়। এজন্য ভোটারদের উচিত সেই ব্যক্তিতে পছন্দ করা যিনি সর্বোপরি কল্যাণকর। নির্বাচন বিশ্লেষক ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, বিসিসির নির্বাচনে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্বিক যে হার তা আজকের এই বাস্তবতায় এসে খুব নতুন কিছু নয়। তবে শিক্ষার পাশাপাশি মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকতে পারার মানসিকতাও জরুরি। কেউ স্বশিক্ষিত হলেই যে তিনি পলিসি বা গভর্নেন্স বুঝবেন না তা নয়। তবে, তার ভেতরে পলিসি গ্রহণের বিষয়ে আগ্রহ এবং দক্ষতার সঙ্গে সেটি বাস্তবায়ন করার যোগ্যতা ও কৌশল থাকাটা জরুরি। মৌলিকভাবে আজ আমাদের এ দেশে সুশিক্ষিত ও সৎ মানুষ প্রয়োজন, প্রয়োজন নির্লোভ রাজনীতিবিদ। একটি গবেষণার বরাত দিয়ে এই বিশ্লেষক বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই আমাদের নির্বাচনে ব্যবসায়ী শ্রেণির প্রবেশ ক্রমবর্ধমান। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী শ্রেণির এই আগ্রহ যা দেখা যাচ্ছে তা কেবল নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগের জায়গা রয়েছে। রাজনীতি হয় সাধারণ মানুষকে কেন্দ্র করে, তাদের অবস্থার উন্নয়নের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা যারপরনাই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কয়েকজন ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া মানুষের মধ্যে এই বোধের সৃষ্টি হতে দেখছি আমরা। সম্ভবত সে সংখ্যাটি খুব হতাশার। আবার প্রথম থেকে রাজনীতি করে যাওয়া অনেককে দেখছি রাজনীতির একটি পর্যায়ে এসে বড় ব্যবসায়ী বনে যাচ্ছেন। তাহলে, কেবল সাধারণের মুক্তি নিয়ে ভাববেন এমন মানুষ কোথায়? সূত্র : ঢাকা পোস্ট SHARES জাতীয় বিষয়: প্রকাশক : শারমিন সুলতানা সম্পাদক : মো:সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় সহ সম্পাদক : মো:শুভ হাওলাদার। প্রধান উপদেষ্টা : মো: মকবুল হোসেন যুগ্ন উপদেষ্টা : ডা. রিয়াদুল ইসলাম খান বরিশাল ঠিকানা:: বিবির পুকুর পাড় হাবিব ভবন, ৫ম তলা ঢাকা ঠিকানা:: উওরা ১২ নং সেক্টর ৩ নং রোড