বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নয়, নির্বাচন ইস্যুতে কারো চাপে কিছু যায় আসে না: প্রধানমন্ত্রী

News News

Desk

প্রকাশিত: ৯:৫৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ প্রসঙ্গে বলেছেন—এমন কোনো চাপ নেই, যেটা তাকে চাপ দিতে পারে।

সোমবার (১৩ মার্চ) গণভবনে সাম্প্রতিক কাতার সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো আন্তর্জাতিক চাপ আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমন কোনো চাপ নাই, যেটা শেখ হাসিনাকে (চাপ) দিতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। কারণ আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ আর উপরে আল্লাহ আছে। আর আমার বাবার আশীর্বাদের হাত আমার মাথায় আছে।

কাজেই কে কী চাপ দিল না দিল এতে কিছু আমাদের আসে যায় না। জনগণের স্বার্থে যেটা করার আমরা সেটাই করব, জনগণের কল্যাণে যে কাজ করার সেটাই করব।

অতীতে বিভিন্ন চাপ সামলানোর কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরকম বহু চাপ তো ছিল। পদ্মা সেতুর আগে তো কম চাপ দেওয়া হয়নি। কোন একটা দেশের সেই অ্যাম্বাসেডর থেকে শুরু করে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে টেলিফোনের ওপর টেলিফোন, হেন তেন। একটা ভদ্রলোক একটা ব্যাংকের এমডি তাকে এমডি পদে রাখতে হবে। তো এমডি পদে কি মধু তা তো আমি জানি না এবং আইনে আছে ৬০ বছর, হয়ে গেছে তার ৭০ বছর বয়স তারপরও এমডি পদে থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটাই হয় এমডি পদে থাকলে বোধহয় মানি লন্ডারিং করা যায়, পয়সা বানানো যায়, পয়সা মারা যায়, গরিবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়। যাই হোক, সেই চাপও কিন্তু শেখ হাসিনা সহ্য করে চলে এসেছে। তারপর নিজের পয়সায় পদ্মা সেতু বানায়ে তাদের দেখালাম এই চাপে আমাদের কিছু আসে যায় না।

সংলাপ কার সঙ্গে করবো?
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নাকচ করে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সংলাপ কার সঙ্গে করবো? ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমি সংলাপ করেছি, কিন্তু তার রেজাল্টটা কী? নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ ছাড়া কিছুই করেনি। ৩০০ সিটে ৭০০ নমিনেশন দিয়ে টাকা খেয়ে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচন থেকে সরায়ে তারপর নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জানি না আল্লাহ আমাকে ধৈর্য দিয়েছেন, সহ্যশক্তি দিয়েছেন; নইলে ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মায়ের হত্যাকারী; গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা যারা করেছে, তাদের সঙ্গে আমি বসেছি শুধু দেশের স্বার্থে।

কোকো রহমান মারা যাওয়ার পর খালেদা জিয়াকে সান্ত্বনা দিতে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মারা গেল, আমি গেলাম তাকে দেখতে। একজন সন্তানহারা মাকে সহানুভূতি জানাতে।

আমাকে কীভাবে অপমানটা করল, আমার গাড়ি ওই বাড়ির মধ্যে ঢুকতে দেবে না। বড় গেইট বন্ধ; টেলিফোন করে সময় নেওয়া হয়েঝে যে আমি এসময় আসব, তারপরও সে গেট বন্ধ করল। আমি তখন চলে গিয়েছি। তো আমি বললাম ঠিক আছে ছোট গেইট দিয়ে ঢুকবো। আমার গাড়ি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই ছোট গেট বন্ধ করে দিলো। তো এত অপমানের পর তাদের সঙ্গে কীসের বৈঠক?

শেখ হাসিনা বলেন, আমার পরিষ্কার কথা, যারা এটুকু ভদ্রতা জানে না তাদের সঙ্গে বৈঠকের কী আছে? কেউ পারবেন আপনার বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের সাথে এভাবে বসে বৈঠক করতে? আপনাকে যদি কেউ এভাবে অপমান করে আপনি পারবেন? কে পারবেন? যেটুকু সহ্য করেছি শুধু দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, নিজের স্বার্থে না। এটা তো প্রমাণিত।

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকার সুযোগ করে দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ; খালেদা জিয়ার ভাই এসে, বোন এসে আমার কাছে, রেহানার কাছে এসে আকুতি করল। এরপর তার সাজাটা স্থগিত করে বাসায় থাকা, চিকিৎসার সুযোগটা করে দিয়েছি। এটুকু যে করেছি সেটাই যথেষ্ট।

তিনি বলেন, ‘যারা বার বার আমাদের ওপর হত্যা করে, আমাদের অপমান করে, সারা বাংলাদেশে কাকে না অপমান করেছে। তারপরও এইটুকু সহানুভূতি পেয়েছে, সেটা শুধু আমার কারণে। নইলে এদের সঙ্গে কিসের বৈঠক, কীসের কী? তাছাড়া আর কী ক্ষমতা আছে তাদের, সন্ত্রাস করা ছাড়া আর তো কোন ক্ষমতা নেই।

সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম